—প্রতীকী ছবি।
কোথাও হাতা-খুন্তি-ঝাঁটা হাতে মদের ঠেক ভাঙতে নেমে পড়ছেন মহিলারা। কোথাও আবার দেশি মদের বেআইনি কারবারের মালকিন তাঁরাই। পুলিশের হাতে বার বার ধরা প়ড়েও পেশা বদলাতে নারাজ।
অশোকনগর, হাবড়া, বনগাঁ, বাগদা, গোপালনগর, গাইঘাটার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে মহিলাদের ভূমিকার দু’রকম এই চিত্র।
দিন কয়েক আগেই অশোকনগর থানার পুলিশ গুমা শক্তিনগর এলাকায় একটি বাড়িতে হানা দিয়ে দেশি মদ-সহ ঠাকুরদাসি বিশ্বাস নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কয়েক বছর ধরে কারবার চালাচ্ছিল ওই মহিলা। দেশি মদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কাউন্টার থেকে মদ কিনে এনে বাড়ি থেকে চড়া দামে বিক্রি করত ঠাকুরদাসি।
এমন উদাহরণ বিচ্ছিন্ন নয়। সাম্প্রতিক সময়ে হাবড়া, গোপালনগর, বাগদা থানার পুলিশ বেশ কয়েকজন মহিলা মদের কারবারিকে গ্রেফতার করেছে। অতীতে যখন চোলাইয়ের রমরমা ছিল, তখনও মহিলারা ওই কারবারে যুক্ত ছিল। ট্রেনে করে নিউ ব্যারাকপুর এলাকা থেকে চোলাই হাবড়া, মছলন্দপুর এলাকায় নিয়ে আসত অনেকে। এলাকায় খুচরো বিক্রি করত।
চোলাই অনেকটা বন্ধ হওয়ার পরে সেই জায়গা নিয়েছে দেশি মদের কারবার। সেখানেও মহিলারা যুক্ত হয়ে পড়ছে বলে জানতে পারছে পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, স্বামীরাই স্ত্রীদের এই কাজে এগিয়ে দিচ্ছে। ধরা পড়ার পরে পুলিশকে ওই মহিলারা জানিয়েছেন, অভাবের সংসারে সহজ রোজগারের আশায় তাঁরা মদের কারবারে নেমেছেন।
পুলিশের অনুমান, মদের কারবারে জড়িত সন্দেহে মহিলাদের উপরে প্রাথমিক সন্দেহ কম হয়। নজরদারি তুলনায় কম থাকে। সেই সুযোগটাই নেয় কেউ কেউ। সহজেই কাউন্টার থেকে মদ কিনে নিয়ে যায় তারা। এলাকায় ঘুরে ফেরিও করে। শাড়ির আঁচলের তলায় বোতল লুকিয়ে নিয়ে গিয়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়।
পুলিশের এক কর্তার অভিজ্ঞতায়, বেআইনি মদের কারবার নিয়ে বেশি সরব হন মহিলারা। কারণ, বাড়ির পুরুষ সদস্যেরা মদ্যপ অবস্থায় নানা অশান্তি করে। টাকা নয়ছয় করে। বেশি ভুগতে হয় বাড়ির মেয়েদেরই। অনেক সময়েই বেআইনি মদের ঠেক ভাঙতে তাই মহিলাদের সামনের সারিতে দেখা যায়। কিন্তু উল্টো চিত্রও আছে। যেখানে মহিলারা কেউ কেউ কম পরিশ্রমে বেশি রোজগারের আশায় মদের কারবার ফেঁদে বসে। বাড়ির পুরুষদেরও তাতে সম্মতি থাকে।