এক গৃহবধূর উপর অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল অজ্ঞাত পরিচয় কিছু মানুষের বিরুদ্ধে। রবিবার ভোরের এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ঢোলাহাটে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় জখম চিত্রা মণ্ডল নামে ওই বধূকে প্রথমে বেলপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তারপর ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছিটেফোঁটা গায়ে পড়ে সামান্য জখম হন ওই মহিলার স্বামী চন্দন মণ্ডলও। লিখিত অভিযোগ না থাকায় পুরো বিষয়টিতে রহস্য দাঁনা বেঁধেছে। মহিলার গোপনাঙ্গেই মূলত অ্যাসিডের ক্ষত রয়েছে। তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘ঘটনা রীতিমতো রহস্যজনক। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত হবে।’’ নিজের বাড়িতে অ্যাসিড নাড়াচাড়া করতে গিয়ে কেউ যদি আহত হন, তবে তা অপরাধ নয় বলেই জানাচ্ছে পুলিশের একটি সূত্র।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্রার বাপের বাড়ি দক্ষিণ ভারতে। মাস ন’য়েক আগে ঢোলাহাটের গোপীনাথপুরের চন্দন সেখানে কাজ করতে গিয়ে তাঁকে বিয়ে করেন। তিন মাস আগে বাড়িতে ফিরে একটি পোলট্রি খামার তৈরি করেন তাঁরা। চিত্রার দাবি, শনিবার রাতে একটি ঘরে তিনি ও তাঁর স্বামী ঘুমাচ্ছিলেন। ভোরবেলা জ্বালা অনুভব করেন চিত্রা। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎই যন্ত্রনায় ঘুম ভেঙে যায়। পরে হাসপাতালে এসে জানলাম, অ্যাসিড পড়েছে গায়ে। রাতে জানালা খোলা ছিল। কেউ হয়তো বাইরে থেকে অ্যাসিড ছুড়েছে।’’ পায়ে এবং গোপনাঙ্গে প্রায় ৭ শতাংশ অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে ওই মহিলা বলে পুলিশ জানিয়েছে। শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনওরকম মারধর বা পণ আদায়ের চেষ্টা নেই বলেই জানিয়েছেন চিত্রাদেবী। বিষয়টিতে হতভম্ভ চন্দনও। রবিবার সন্ধে পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে স্বামী-স্ত্রীর দাবি, বাইরে থেকেই কেউ অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়েছে।
ঘটনার কথা জেনে এ দিন ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত সেরেছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বাইরে থেকে জানালা দিয়ে কেউ অ্যাসিড ছুঁড়লে তার প্রভাব বেশি হতো। ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতো। আরও চার দিকে ছড়িয়ে যেত। কিন্তু তা হয়নি। ঘরে মশারি টাঙানো ছিল। তাতেও অ্যাসিডের কোনও চিহ্ন নেই। বাড়িতে কোনও কাজে অ্যাসিডও ব্যবহার হয় না বলেই জানিয়েছে ওই দম্পতি। তা ছাড়া মহিলার পোশাকেও কোনও অ্যাসিডের চিহ্ন ছিল না বলেই জানিয়েছে পুলিশ।