জনগণনায় নাম ওঠেনি, ক্ষোভ গ্রামে

জানা গেল, ২০১১ সালের জনগণনায় প্রায় গ্রামসুদ্ধ লোকের নাম বাদ পড়েছিল মথুরাপুর ১ ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে সদিয়ালে। যার ফল এখনও ভুগছেন তাঁরা।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মথুরাপুর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৬
Share:

অভাগা: সরকারি সাহায্যের অভাবে এ ভাবেই দিন কাটছে। নিজস্ব চিত্র

দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর ডিজিটাল রেশন কার্ডই নেই। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

কেন এই অবস্থা?

জানা গেল, ২০১১ সালের জনগণনায় প্রায় গ্রামসুদ্ধ লোকের নাম বাদ পড়েছিল মথুরাপুর ১ ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে সদিয়ালে। যার ফল এখনও ভুগছেন তাঁরা।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার-রায়দিঘি রোডের শোভানগর মোড় থেকে ইট পাতা রাস্তা সোজা চলে গিয়েছে সদিয়াল গ্রামে। ৮-১০ মিনিটের হাঁটা পথ। রাস্তার দু’ধারে বেশির ভাগই কুঁড়ে ঘর। গ্রামের ৫৮ নম্বর বুথে ভোটার সংখ্যা ৮৬৯ জন। তফসিলি ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামের প্রায় সকলেই দিনমজুর বা মৎস্যজীবী। ২০১১ সালের শেষ জনগণনার রিপোর্ট ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়। সে সময়ে ওই গ্রামের রাস্তার ডান দিকের প্রায় ২০০টি পরিবারের নাম বাদ পড়েছিল।

তাঁদের নাম আজও সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করা যায়নি। আর নাম নথিভুক্ত না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের সব প্রকল্প থেকে বঞ্চিত দরিদ্র পরিবারগুলি। পুরনো রেশন কার্ড বাদ পড়েছে অনেক আগেই। কেন্দ্রের নির্দেশে নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হয়েছে। তাতে সস্তায় রেশন পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকারি নথিতে নাম না থাকায় এবং রেশন কার্ড না থাকায় বাসিন্দারা কোনও সুযোগ-সুবিধাই পান না। বঞ্চিত হচ্ছেন ঘর নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, শৌচাগার নির্মাণের জন্য স্বচ্ছ ভারত মিশন, ঘরে ঘরে বিনামূল্যে গ্যাসের উজ্জ্বলা যোজনা, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা-সহ সমস্ত প্রকল্প থেকেও।

একেই পিছিয়ে পড়া গ্রাম, তার উপরে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা না মেলায় দুশ্চিন্তায় আর আশঙ্কায় দিন কাটান বাসিন্দারা। ঝড়ু কয়ালের কুঁড়ে ঘরটি ত্রিপল দিয়ে ঢাকা। ছেলে-বৌমা-নাতিকে নিয়ে একচিলতে ভাঙাচোরা কুঁড়ে ঘরে বাস। দিনে-রাতে বৃষ্টি হলে ত্রিপল জড়িয়ে বসে থাকতে হয়। লজঝরে কুঁড়ে ভেঙে পড়ে চাপা পড়ায় ভয়ে দিনের বেলায় এ বাড়ি ও বাড়ি ঘোরে পরিবারটি। ক্লাবেও আশ্রয় নেয়। কিন্তু রাতে মাথা গুঁজতে ফিরতেই হয়। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি বানানোর সুযোগ পাননি তাঁরা। এমন অবস্থা গ্রামের আরও অনেকের।

স্থানীয় বাসিন্দা তথা কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান বাপি হালদারের ক্ষোভ, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরে একাধিকবার জানানোর পরেও কেউ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে পঞ্চায়েতের তরফে রাজ্য সরকারের গীতাঞ্জলি প্রকল্প ও বিধায়ক তহবিলের টাকায় ২০টি গরিব পরিবারের বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ করা হয়েছে।

পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জনগণনার সমীক্ষার সময়ে নজর দেওয়া হয়নি। জেলা থেকে ফের গণনার নির্দেশ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বিডিও মুজিবর রহমান জানান, জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement