আশা: বিক্রি আশানুরূপ নয়। তবু ব্যস্ততা পটুয়াদের। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনের প্রভাবে বিভিন্ন ক্লাবের দুর্গা পুজো ও কালী পুজোর বাজেট কমেছিল। এ বার হিঙ্গলগঞ্জের সরস্বতী পুজোতেও একই অবস্থা হল।
প্রতি বছর সরস্বতী পুজো বড় করে হয় হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক জুড়ে। প্রতিমা শিল্পী, ডেকরেটরদেরও ব্যবসা হত ভাল। তিন-চার দিন ধরে চলত বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তবে এ বার বিভিন্ন ক্লাবে পুজো হলেও বাজেট কমেছে। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত প্রতিমা শিল্পী, ডেকরেটর ব্যবসায়ীদেরও।
হিঙ্গলগঞ্জ থানার শাহাপুর মোড় এলাকার প্রতিমা শিল্পী রাজীব দাস সারা বছর ধরে প্রতিমা বিক্রি করে সংসার চালান। জানালেন, লকডাউনের পর থেকে সব পুজোতেই প্রতিমা বিক্রি খুব কম হচ্ছে। বেশি দাম দিয়ে কেউ প্রতিমা নিতে চাইছে না। রাজীব বলেন, ‘‘দুর্গা ও কালী প্রতিমা অল্প বানিয়ে ছিলাম। তা-ও সব বিক্রি হয়নি। এ বার সরস্বতী প্রতিমা বানালাম ৩০টা। তা-ও ১০টা বিক্রি হয়নি। অথচ, গত বছর ৭০টা সরস্বতী প্রতিমা বিক্রি হয়েছিল। খুব সঙ্কটের মধ্যে আছি।’’ হিঙ্গলগঞ্জের আরও দুই প্রতিমা শিল্পী বাবু দাস, সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব ক্লাব এ বার ছোট করে পুজো করছে। তাই যারা আগে ১০ হাজার টাকার প্রতিমা নিত, এ বার তারা ৩ হাজারের প্রতিমা নিচ্ছে। সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তবে আমরা প্রতিমার দাম বাড়াতে পারিনি।’’ তিনি জানান, এখনও সব প্রতিমা বিক্রি হয়নি। চিন্তায় আছেন। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ডেকোরটর্স মালিক সংগঠনের তরফে শঙ্কর দাস জানালেন, ব্যবসা গত বাছর সরস্বতী পুজোয় এই চত্বরে যা হয়েছিল, এ বার তার তুলনায় অর্ধেক হচ্ছে। লকডাউনের পর থেকেই বেহাল পরিস্থিতি। অনেক ছোট ছোট ডেকোরেটর মালিক দিনমজুরি করছেন। হিঙ্গলগঞ্জের মামুদপুর গ্রামে বহু বছর ধরে ধুমধাম করে সরস্বতী পুজো হয়। যা দেখতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় করেন। তবে এ বার এই এলাকার একাধিক ক্লাব সূত্রের খবর, তাঁরা বাজেট অনেক কমিয়েছেন।
একটি ক্লাবের সম্পাদক প্রশান্ত বেরা বলেন, ‘‘আমাদের বাজেট গত বছর ছিল দেড় লক্ষ টাকা। এ বার ৮০ হাজারের মধ্যে পুজো করছি।’’ মামুদপুরের আর একটি বড় ক্লাবের তরফে ইন্দ্রজিৎ কাণ্ডারি বলেন, ‘‘গত বছর প্যান্ডেল ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকার। এ বার প্যান্ডেল হচ্ছে ৫০ হাজারের মধ্যে। গত বছর প্রতিমা ছিল ১২ হাজার টাকার। এ বার প্রতিমা হচ্ছে ৫ হাজার টাকার।’’