শওকত মোল্লা (বাঁ দিকে), নওশাদ সিদ্দিকী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আইএসএফের সঙ্গে মাওবাদীদের যোগ আছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতা তথা বিধাননগরের পুরপ্রধান সব্যসাচী দত্ত। আইএসএফ খুনের রাজনীতি করছে বলে একই সভা থেকে অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতা সওকাত মোল্লা। দু’টি অভিযোগই অস্বীকার করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। ভাঙড়ে তৃণমূলই খুনোখুনি করছে বলে দাবি তাঁর।
বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের কাশীপুর থানার শোনপুর বাজারে সভার আয়োজন করেছিল ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল। সব্যসাচী, সওকাত ছাড়াও ছিলেন আরাবুল ইসলাম, হাকিমুল ইসলাম, বাহারুল ইসলাম, অদুত মোল্লা-সহ বহু নেতা। সওকাত বলেন, ‘‘আর কত খুন করলে আইএসএফ শান্ত হবে? তিন জনকে খুন করার পরেও আপনাদের আশা মেটেনি? আপনারা বলছেন সওকাত, আরাবুল, হাকিমুলকে খুন করবেন। ভাঙড়ের শান্তির জন্য যদি আমাদের খুন করলে আপনারা শান্ত হন, তা হলে আমরা প্রস্তুত।’’ দিন কয়েক আগে মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ বেধেছিল। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সওকাত বলেন, ‘‘সে দিন ভাঙড়ে ওরা যে ভাবে বোমাবাজি করেছিল, তাতে করে পার্টিটার নাম হওয়া উচিত ইন্ডিয়ান বম্বিং পার্টি।’’ তাঁর অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের এনেছিল আইএসএফ। সবেমাত্র ভাঙড়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সব্যসাচী। এ দিনই এলাকায় প্রথম সভা করলেন। সব্যসাচী বলেন, ‘‘মাত্র দু’বছরের একটা দল (আইএসএফ) এত টাকা পাচ্ছে কোথা থেকে? রামের টাকায় ওই দল চলছে। মাওবাদীদের সঙ্গে ওদের যোগাযোগ আছে।’’ পুলিশকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, ‘‘সে দিন (মনোনয়ন জমার শেষ দিন) পুলিশ কী করছিল? কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না? তাদের কাছে কি আইবি রিপোর্ট ছিল না? সরকার কি ব্যবস্থা নিতে বারণ করেছিল?’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে বলব, আপনারা সরকারের থেকে মাইনে পান। সরকারের দিকে আগে খেয়াল রাখুন।’’
নওশাদ পরে বলেন, ‘‘আমি ভাঙড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। আমি তো বলেছি, মুখ্যমন্ত্রী চাইলে ভাঙড়ে শান্তির জন্য আমরা দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেব। কিন্তু এর উত্তর আমরা আজও পাইনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা আমাদের নামে মাওবাদী থেকে শুরু করে জঙ্গি-যোগ জুড়ে দিচ্ছেন। প্রশাসনে তো ওঁরাই আছেন, তা হলে খুঁজে বের করতে পারছেন না কেন?’’ বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘ওরাই (তৃণমূল) বাইরে থেকে গুন্ডা এনে ভাঙড়ে অশান্তি করছেন।’’
এ দিন সভামঞ্চে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বাদল জমাদারের ছেলে আনারুল তৃণমূলে যোগ দেন। সিপিএম নেতা তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল আনারুলকে মিথ্যা অস্ত্র-মামলায় ফাঁসিয়েছিল। হয় তো চাপে পড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’’ আনারুল মন্তব্য করেননি।