Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee death: চায়ের দোকানে বসে জমে উঠত সুব্রতের আড্ডা

২০১৮ সাল নাগাদ কপিলমুনি মন্দির সামনে ডালা-মালা দোকানদারদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা, অভিযোগের কথা শুনেছিলেন তিনি।

Advertisement

সমরেশ মণ্ডল

সাগর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫১
Share:

মেলা প্রাঙ্গনে সুব্রত। ফাইল চিত্র।

মন ভাল নেই সাগরের।

Advertisement

দশ বছরে বেশি সময় ধরে যিনি সাগর মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন, সেই মানুষটিই হঠাৎ চলে গেলেন।

২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত টানা দশ বছর গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনার মূল দায়িত্বে থাকতেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। পরিবর্তন হয়েছে তাঁর দফতরের। কিন্তু মেলা পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। সাগরমেলার পরতে পরতে জড়িয়ে তাঁর কর্মকাণ্ড।

Advertisement

২০১৮ সাল নাগাদ কপিলমুনি মন্দির সামনে ডালা-মালা দোকানদারদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা, অভিযোগের কথা শুনেছিলেন তিনি। আশ্বাস দেন, সমস্যার দ্রুত সমাধান করবেন। গঙ্গাসাগর মেলার পাশাপাশি সাগরদ্বীপের উন্নয়নের দিকেও তিনি নজর দিয়েছিলেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ।

গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন সুব্রতবাবু সাগরের দু’নম্বর রাস্তার কাছে শনিমন্দিরের পাশে চা বিক্রেতা ভৃগুরাম দাসের দোকানে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বসে চা খেতেন। সেখানে বসে স্থানীয় দোকানদার, রিকশাওয়ালা, আরও নানা পেশার মানুষের সঙ্গে আড্ডা জুড়তেন। অভাব-অভিযোগের কথা শুনতেন।

ভৃগুরাম বলেন, ‘‘বেশ কয়েকবার আমার দোকানে এসে চা খেয়েছেন উনি। ওঁর সঙ্গে অনেক বিধায়ক, মন্ত্রী, সরকারি অফিসারেরা থাকতেন।’’ গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতে ২০১৮ সালে শিশুদিবস উদযাপনের পাশাপাশি পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি রাস্তার উদ্বোধন করেছিলেন সুব্রতবাবু, জানালেন বর্তমান গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘চেমাগুড়ি বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি আনা হত সুব্রতদার জন্য। দাদা আর আমাদের মধ্যে নেই, ভাবতেও পারি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দাদার কাছে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে যতবার ছুটে গিয়েছি প্রধান থাকাকালীন, কোনও দিন ফিরিয়ে দেয়নি। প্রায় সব সমস্যাই দাদা দায়িত্ব নিয়ে সমাধান করে দিতেন।’’ সাগরের ধসপাড়া সুমতিনগর ১ পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রগঞ্জ গ্রামে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ গ্রামীণ বিকাশ কেন্দ্রের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সুব্রতবাবু। সেটা ২০১৫ সালের কথা। সেখানকার মহারাজ সুব্রতের পছন্দের খেজুর গুড় তাঁর হাতে তুলে দিতেন বলে জানা গেল। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘সদা হাস্যময় মানুষটিকে এখানে কেউ ভুলতে পারবে না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী থাকাকালীন মেলার মাঠের বিভিন্ন মাটির রাস্তা থেকে শুরু করে ফুলের বাগান নিজের হাতে সুন্দর করে সাজিয়েছিলেন।’’ সুব্রতবাবুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কন্ঠরোধ হয়ে আসে তাঁর। বললেন, ‘‘আসন্ন সাগর মেলায় সুব্রতদার জায়গায় হয় তো অন্য কেউ দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু অত বড় হৃদয়বান মানুষকে বোধ হয় আর কোনও দিন আমরা পাব না।’’

স্মৃতিকথা: বাঁ দিকে, ভৃগুরামের এই দোকানেই এসে চা খেতেন সুব্রতবাবু।

মেলা প্রাঙ্গণে সুব্রতবাবুর আবক্ষ মূর্তি বসানোর কথা ভাবছেন বলে জানালেন তিনি। রুদ্রনগর পঞ্চায়েতে ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত দফতরের অর্থানুকুল্যে তিনতলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সুব্রতবাবু। ভবনের দ্বারোদঘাটনের কথা ছিল শীঘ্রই। ওই ভবনের নাম ‘সুব্রত মুখার্জি ভবন’ রাখা হবে বলে জানালেন বঙ্কিম হাজরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement