বিপত্তি: নতুন কেনা বাইক হাতে সেলিম গাজি। ধাক্কা মারলেন মাস্টারমশাইকে। ছবি: নির্মল বসু
সচেতনতা বাড়াতে যতই প্রচার করা হোক না কেন, মোটর বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু মিছিল কিছুতেই বন্ধ হতে চাইছে না বসিরহাটে।
রবিবারও মহকুমার একাধিক জায়গায় বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছেন বাদুড়িয়ার তারাগুনিয়া গ্রামের মোমিন মোল্লা (২২)। বসিরহাটের মির্জাপুর টাকি রোড এবং বসিরহাট থানার গেটের সামনে বাইক দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধ-সহ তিনজন আহত হন।
সম্প্রতি ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রচার শুরু হয়েছে। গাড়ি আস্তে চালানোর জন্য, মোটর বাইক আরোহীদের মাথায় হেলমেট পরার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষে বার বার সাধারণ মানুষকে বলা হচ্ছে। হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের বোধোদয় ঘটাতে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে তাঁদের ফুল-মিষ্টি তুলে দিচ্ছে পড়ুয়ারা। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে হেলমেট কিনে নিয়ে আসছে বাইক আরোহীদের জন্য। তা সত্ত্বেও প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও বাইক দুর্ঘটনা ঘটছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়ার তারাগুনিয়া গ্রামের মোমিন মণ্ডল পেশায় দর্জি। শ্বশুরবাড়ি বাগজোলা গ্রামে। এ দিন সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে হেলমেট ছাড়াই বাইক নিয়ে বেরিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। সকাল ৯টা নাগাদ রুদ্রপুরের কাছে রাস্তার বাঁকের মুখে দ্রুত গতিতে আসা একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগলে গুরুতর আহত হন ওই যুবক। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ ট্রাকটি আটক করেছে।
এ দিন দুপুরে অন্য একটি ঘটনা ঘটেছে বসিরহাট থানার গেটের সামনে। বসিরহাটের মির্জাপুর এলাকার একটি দোকান থেকে নতুন গাড়ি কিনেছেন স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দা সেলিম গাজি। নড়বড়ে হাতে নতুন গাড়ি ইটিন্ডা রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। মাথায় অবশ্য হেলমেট ছিল তাঁর। বেলা ২টো নাগাদ বসিরহাট থানার গেটের সামনে দিয়ে ছাতা মাথায় যাচ্ছিলেন দালালপাড়ার বাসিন্দা বসিরহাট হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক গোবিন্দপ্রসাদ দালাল। একে নতুন হাত, তার উপরে সেলিমের বাইকের গতি ছিল বেশি, জানাচ্ছেন প্রকত্যক্ষদর্শীরা। বৃদ্ধকে ধাক্কা মারে বাইকটি।
দু’জনেই রাস্তার উপরে ছিটকে পড়েন। বৃদ্ধের ছাতা দূরে উড়ে গিয়ে পড়ে। মাথায় আঘাত লাগায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। সেলিম গাজি ও তাঁর সদ্য কেনা মোটর বাইকের জায়গা হয় থানায়।
তা দেখে স্থানীয় অনেককেই বলতে শোনা গেল, পুলিশ-প্রশাসন প্রচার যতই করুক, মানুষের নিজের বোধবুদ্ধি না শুধরালে দুর্ঘটনা এড়ানো অসম্ভব।