অনুশীলন: এই মাঠই সাজানো হবে। নিজস্ব চিত্র
নড়বড়ে পরিকাঠামো। মাঠে ভাল মানের ঘাস ও কোচেদের থাকার ভাল জায়গাও নেই। শৌচাগার মাত্র একটি। তার মধ্যেই চলত প্রশিক্ষণ। কাকদ্বীপ স্পোর্টস কমপ্লেক্সের এই অবস্থা এখন অতীত বলাই চলে। ইতিমধ্যে খোলনলচে বদলানোর কাজ শুরুর তোড়জোড় চলছে। এর সুবাদে ‘মিনি স্টেডিয়াম’-এর তকমা পাচ্ছে মহকুমা সদরের এই সাবেক মাঠ। মাঠের উন্নতির জন্য তিন সাংসদের উন্নয়ন তহবিল থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
আপাতত দু’টি গ্যালারি, ড্রেসিং রুম ও আরও কয়েকটি শৌচাগার তৈরি করা হবে। পরে ধাপে ধাপে লাগানো হবে উন্নতমানের ঘাস। কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা এলাকার মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা জানান, রাজ্যসভার তিন সাংসদ বিবেক গুপ্ত, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সুখেন্দুশেখর রায় সাংসদ কোটার টাকা দিয়েছেন। মন্টুবাবুর কথায়, ‘‘গ্যালারির জন্য চার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও হয়ে গিয়েছে।’’
২০০৫ সালে বাম আমলে তৈরি হয়েছিল কমপ্লেক্সটি। কিন্তু সে সময়ে পাঁচিল ছিল না। নেশাড়ুদের আড্ডার জায়গা হয়ে উঠেছিল। গত বছর সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের তরফে পাঁচিল করে দেওয়ায় সে সমস্যা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল-স্তরে বিভিন্ন এলাকার ছেলেমেয়েদের বাইরে রাজ্য বা জেলা স্তরে খেলতে গেলে ফিরতে রাত হয়। সাগর, নামখানার মতো প্রত্যন্ত এলাকায় তখন যানবাহনের অভাবে তারা রাতে থাকার জায়গা পায় না। স্পোর্টস কমপ্লেক্সে থাকার ব্যবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। মাঠটি সাজানো হলে সেই সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করেছেন মন্ত্রী। এ ছাড়া, এখন বিভিন্ন খেলার অ্যাসোসিয়েশনের দফতর নেই। গ্যালারি হলে তারা সেখানে নিয়মিত ভাবে নিজেদের কাজকর্ম চালাতে পারবে।
তবে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠটি খুব একটা চওড়া নয়। সেখানে স্কুলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ২০০ মিটারের ট্র্যাক তৈরি করতেই জায়গা সংকুলান হয় না। এর মধ্যে গ্যালারি হলে কতটা জায়গা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষকেরা। তাঁদের মতে, মহকুমার এই মাঠেই বিভিন্ন অ্যাথলেটিক মিট হয়। সেই ব্যবস্থা বজায় রেখেই গ্যালারি করা জরুরি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। নতুন ভাবে স্টেডিয়াম তৈরির ব্যাপারে সকলের সঙ্গে কথা বলেই এগোনো হবে বলে মনে করেছিলেন তাঁরা। যদিও তা হয়নি। জেলা স্কুল ক্রীড়া বোর্ডের এগজিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সন্দীপ কামার বলেন, ‘‘গ্যালারি তৈরিতে ঠিক কতটা জায়গা নেওয়া হবে, তা আমাদের সঙ্গে একটু আলোচনা করে নিলে ভাল হতো। কারণ, শুধুমাত্র ইঞ্জিনিয়ররা বিষয়টি বুঝবেন না। বাইরের খেলোয়াড়েরাও নন।’’
তাতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করেন মন্টুরামবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতা থেকে কিছু ফুটবলার এসে গ্যালারির অবস্থান কী হচ্ছে, তা দেখে যাওয়ার পরেই জেলা পরিষদের তরফে কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’