স্বস্তি: কৃষি আইন বাতিলের পরে মিছিল। হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে আন্দোলন করছেন কৃষকেরা। তাঁদের সমর্থনে দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন জেলার চাষিরাও শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে খুশির হাওয়া তাঁদের মধ্যে।
উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মিটিং-মিছিল থেকে শুরু করে রাস্তা অবরোধ হয়। এ দিন তাঁরাই মাইক প্রচার করে দিল্লির কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। কৃষক সংগঠনের নেতা অনির্বাণ দেব বলেন, “কেন্দ্রের কৃষক বিরোধী সরকার মেহনতি কৃষকদের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাজিত হল। আন্দোলনকারী কৃষকদের আমরা অভিবাদন জানাচ্ছি।”
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বনগাঁয় সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল কৃষক সংহতি মঞ্চ। মঞ্চের তরফে পথে নেমে কবিতা, গান, নাটক, মূকাভিনয়, পথসভার মাধ্যমে চলছিল প্রতিবাদ। এ দিন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কৃষক সংহতি মঞ্চ। সংগঠনের তরফে সমস্ত আন্দোলনরত কৃষক এবং সমাজের সবস্তরের মানুষকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে অল ইন্ডিয়া কিসান মজদুর সংগঠন। সংগঠনের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সদস্য পতিতপাবন মণ্ডল বলেন, “এই কৃষি আইন আদতে কর্পোরেট স্বার্থে করা হয়েছিল। আমরা জানতাম, এই আন্দোলনে কৃষকেরা জয়ী হবেনই। সেটাই হয়েছে।”
কৃষি আইনের প্রতিবাদে বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ, মিছিল হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায়। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ‘সারা ভারত খেতমজুর, কৃষক ইউনিয়ন’-এর রাজ্য সম্পাদক তুষার ঘোষ বলেন, “দেশ তথা বিশ্বের কাছে কৃষি আইন নিয়ে সরকারের মাথা হেঁট হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ কৃষক আন্দোলন এবং সমাজের অন্য অ়ংশের মানুষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে মাথা নত করতে বাধ্য করল। এই আন্দোলন ভারতের শ্রমজীবী মানুষকে পথ দেখাবে।”
কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে জয়নগরের নতুনহাটে দীর্ঘদিন মঞ্চ বেঁধে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি চালান স্থানীয় কৃষকেরা। এ দিন আইন বাতিলের পরে কৃষকদের তরফে সাহাবুদ্দিন শেখ বলেন, “বহু কৃষকের আত্মবলিদানের বিনিময়ে এই সিদ্ধান্ত নিল সরকার। বহু অত্যাচার উপেক্ষা করে গড়ে ওঠা দীর্ঘ কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক জয় হল। এই ঘোষণা প্রমাণ করল, গণআন্দোলনই মুক্তির একমাত্র পথ।”