বনগাঁ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে দীর্ঘ নাটক চলল বুধবার বেলা আড়াইটে পর্যন্ত।
মঙ্গলবার ওই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি রতন ঘোষের স্ত্রী রত্নাদেবী। যদিও মঙ্গলবার রত্নাদেবী দলীয় প্রতীক জমা দিতে পারেননি। এ দিন জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হস্তক্ষেপে শেষ মুহূর্তে দলীয় প্রতীক জমা দিয়েছেন রত্নাদেবী।
ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে চেয়ে এ বার দাবিদার ছিলেন দু’জন। ওয়ার্ড তৃণমূল সভাপতি মনোরঞ্জন বিশ্বাস ও রতনবাবু। প্রার্থী বাছাই সভাতেও ওই দু’জনের নাম উঠেছিল। পরবর্তী সময়ে পুরসভা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতনবাবু চাকরি ছাড়তে দেরি করায় সরকারি নিয়মে আর প্রার্থী হতে পারেননি। রতনবাবু প্রার্থী হতে পারছেন না, ফলে মনোরঞ্জনবাবু প্রার্থী হচ্ছেন সেটাই প্রাথমিক ভাবে সকলে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাত্ রতনবাবু প্রার্থী হিসাবে তাঁর স্ত্রী রত্নাদেবীর নাম প্রস্তাব করে বসেন।
সোমবার তৃণমূলের বাকি ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। কিন্তু মঙ্গলবার রত্নাদেবীকে সঙ্গে নিয়ে রতনবাবু মহকুমাশাসকের দফতরে এসে মনোনয়ন জমা দেন। সঙ্গে কিছু কর্মী-সমর্থক ছিলেন।
এ দিকে, দলীয় নেতৃত্বের একাংশ অবশ্য মনোরঞ্জনবাবুকে আশ্বস্ত করে জানান, কেউই এখনও প্রার্থী হননি। মনোরঞ্জনবাবুর অনুগামীরা বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাসের কাছে গিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দাবি করেন, তাঁকেই প্রার্থী করতে হবে। মহিলা-পুরুষ অনেকে ছিলেন সেখানে। অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তেও দেখা যায়। তাঁরা দাবি করেন, কয়েক বছর ধরে মনোরঞ্জনবাবু ওয়ার্ডের সংগঠন মজবুত করেছেন।
কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত অনিশ্চয়তা ছিল। দুপুরে বৈঠকে বসেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর আঢ্য ও বিশ্বজিত্বাবু। সেখানে নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয়, প্রতীক দেওয়া হবে রত্নাদেবীকেই। সেই মতো দুপুরে মনোরঞ্জনবাবু দলীয় প্রতীক তুলে দেন রতনবাবুর হাতে।
মনোরঞ্জনবাবু বলেন, “আমাকে দল প্রার্থী করেছিল। কিন্তু রতনবাবুর সম্মানের দিকে তাকিয়ে ও জ্যোতিপ্রিয়বাবুর অনুরোধে আমি ওই দাবি থেকে সরে এসেছি। রত্নাদেবীর হয়ে নির্বাচনেও খাটব।” দলীয় সূত্রের খবর, মনোরঞ্জনবাবুর ‘সম্মান রাখতে’ তাঁকে খুব শীঘ্রই বনগাঁ শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি করা হবে।