ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিরোধীদের পার্টি অফিস ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ উঠছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। এ বার অশোকনগরে তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়ের মিছিলে হামলার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তৃণমূলের দু’জন সমর্থক জখম হয়েছেন। একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএম নেতা সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক নেই। ওটা গ্রামবাসীদের নিজেদের ঝামেলা।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে স্থানীয় শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকার পালপাড়ায় সাড়ে ১২টা নাগাদ তৃণমূলের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলে বাজি ফাটাচ্ছিলেন কর্মীরা। অভিযোগ, সে সময় স্থানীয় বাসিন্দা অমল কর্মকারের গ্রিলের দোকানের সামনেও বাজি ফাটায় তাঁরা। তখনই অমল ও তাঁর ছেলে তাপস এবং আর কয়েকজন মিছিলে এলোপাথাড়ি ইট ছোড়েন বলে অভিযোগ। সেই ইটের ঘায়েই জখম হন শুকদেব জানা এবং শম্ভু মল্লিক নামে দুই তৃণমূল কর্মী। শুকদেবের মাথা ফেটে গিয়েছে। তাঁকে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মাথায় সেলাইও পড়েছে। শম্ভুর চোট লাগে পেটে। তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় তাপস কর্মকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ধীমানবাবু বলেন, ‘‘হামলাকারীরা সকলেই সিপিএমের সমর্থক। সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে ওই হামলা করেছে।’’ এর আগেও ওই এলাকায় ভোটের পর মিছিলে সিমিএম হামলা করেছিল বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসীরা জানান, অতীতে তাপসরা তৃণমূল করত। কিন্তু এ বারের ভোটে সিপিএমের হয়েই ওদের প্রচারে করতে দেখা গিয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহল চলছে।
বাদুড়িয়ার যদুরহাটি উত্তরের পিঙ্গলেশ্বর গ্রামে কংগ্রেসের মিছিল বের হয়। অভিযোগ, সে সময় তৃণমূলের নেতা খলিল সর্দারের বাড়ির সামনে বাজি ফাটায় কংগ্রেস কর্মীরা। এর প্রতিবাদ করায় বচসা শুরু হয়। সন্ধ্যায় খলিল কুলবেড়িয়া মোড়ে গেলে কংগ্রেস কর্মীরা তাঁর মাথা শাবল দিয়ে মেরে ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তিনি রুদ্রপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর চুনাখালিতে গোসাবার বিজেপি প্রার্থী সঞ্জয়কুমার নায়েক ও এজেন্ট দুধকুমার দাসের বাড়িতেও হামলা করে লুঠপাট চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘ভোটের পর থেকে তৃণমূল চারিদিকে সন্ত্রাস চালাচ্ছে৷ ওরা আমার বাড়িতেও হামলা করে লুঠপাট করে৷ ওরা আমাদের অনেক কর্মীর বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে৷’’ অভিযোগ অস্বীকার করে গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, ‘‘এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি৷ এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কেউ যুক্ত নয়৷ পুলিশকে বলব তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য৷ আমরা দলগত ভাবে এই ধরনের ঘটনাকে সমর্থন করি না৷’’