মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোয় এ বার ক্লাবগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, বিদ্যুতের বিলে ৭৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত বছর ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল ক্লাবগুলিকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনায় প্রায় চার হাজার পুজো কমিটি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ২৯০০ পুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া হয়েছিল।
এ বার অনুদানের অঙ্ক বাড়ায় খুশির হাওয়া দুই জেলার অনেক উদ্যোক্তাদের মধ্যেই। কোন খাতে অতিরিক্ত টাকা খরচ করা হবে, সেই পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। তবে বাড়তি টাকা রাজ্য কোথা থেকে জোগান দেবে, তা নিয়ে নাগরিকদের অনেকে চিন্তিত। এক দিকে যেখানে বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়ছে, সেখানে সরকারি অনুদান বাড়ার ফলে আমজনতার পকেটে ঘুরপথে চাপ বাড়বে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বনগাঁ শহরের অন্যতম বড় পুজো করে অভিযান সঙ্ঘ। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ক্লাবের সম্পাদক অভিতাভ দাস বলেন, “আমরা এমনিতেই বড় পুজো করি। গত বার রাজ্য সরকারের থেকে ৭০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এ বার ৮৫ হাজার টাকা পেলে আরও বড় পুজোর আয়োজন করতে পারব।” ভাঙড়ের কাশীপুর শতধারা প্রমীলা সঙ্ঘের সম্পাদক রিনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পাড়ার মেয়ে-বৌরা মিলে কয়েক বছর ধরে পুজো করছি। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া অনুদানে আমাদের অনেক সুবিধা হয়। ওই টাকা দিয়ে আমরা দুঃস্থ, মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বই-খাতা দেওয়া, বস্ত্র বিতরণ সহ নানা সামাজিক কাজকর্ম করি। এ বছর অনুদান বাড়ায় আমরা আরও বেশি সামাজিক কাজকর্ম করতে পারব।”
তবে পুজো কমিটিকে অনুদানের বিরোধিতাও করেছেন কেউ কেউ। বনগাঁ শহরের অন্যতম বড় পুজো উদ্যোক্তা মতিগঞ্জ ঐক্য সম্মেলনীর কর্ণধার তথা বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকা নিই না। সরকারি অর্থের অপচয় করে পুজো উদ্যোক্তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে ভোট কেনার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী টাকা না দিলেও দুর্গা পুজো হত। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত, এই টাকা গরিব মানুষের কাজে লাগানো।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “দুর্গাপুজো বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব। উৎসবের ধর্মীয় দিক বাদ দিলেও অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। স্বাধীনতার পরে এই প্রয়াস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ নেননি।”