আন্দোলন: ঘোজাডাঙা সীমান্তে। ছবি: নির্মল বসু
রাজ্যের অন্য সীমান্তের স্থলবন্দরে কাজ শুরু হলেও এখনও চালু হল না বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত। এ নিয়ে বুধবার বিক্ষোভ দেখাল ঘোজাডাঙা ল্যান্ড পোর্ট সমন্বয় কমিটি।
বসিরহাটের মহকুমাশাসক বিবেক ভাসমের দফতরের সামনে বোটঘাটে মঞ্চ করে মাইক বেঁধে বিক্ষোভ সভা করা হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রফতানির কাজ শুরু হোক। বিক্ষোভকারীরা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে বাণিজ্য বন্ধ। এতে কোটি কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। এ দিকে, আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সীমান্ত বাণিজ্যে জড়িত হাজার হাজার মানুষ।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের শুরু থেকেই বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত ৮৩ দিন ধরে ঘোজাডাঙা সীমান্তে প্রায় ১৬০০ ট্রাক দাঁড়িয়ে। এর মধ্যে ৬৭টি বাংলাদেশ থেকে আসা ট্রাকও আছে। আটকে থাকা ট্রাকে পাথর এবং সর্ষের খোল রয়েছে। বাণিজ্য বন্ধের কারণে দিন দিন লোকসান বাড়ছে। ট্রাকে থাকা মালপত্র অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ট্রাক মালিক পক্ষের দাবি, দিনের পর দিন পাথর ভর্তি নিয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকায় ইতিমধ্যে ট্রাকের ইঞ্জিন-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। টায়ার খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। কয়েকটি সংগঠনকে একত্রিত করে গড়া হয় ‘ঘোজাডাঙা ল্যান্ড পোর্ট সমন্বয় কমিটি।’ ওই কমিটি থেকে দ্রুত সীমান্ত বাণিজ্য শুরুর দাবি জানানো হয় সরকারি সংশ্লিষ্ট সব দফতর থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের। তা সত্ত্বেও বাণিজ্য শুরু হয়নি।
এ দিন শতাধিক ব্যবসায়ী, মালিক, শ্রমিকেরা ঘোজাডাঙা স্থলবন্দর খোলার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ সভা করেন। বেলা ১০টা থেকে সভা শুরু হয়। কমিটির সভাপতি কান্তি দত্ত বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রাখার কারণে আমাদের কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নেতা, মন্ত্রী, আমলা থেকে শুরু করে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে ক্লান্ত আমরা। অথচ পেট্রাপোল, মালদহের মহদিপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি, শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি, কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা, আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁও এবং দার্জিলিংয়ের নকশালবাড়ির পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে কী ভাবে বাণিজ্যের অনুমতি মিলেছে।’’
কমিটির সম্পাদক জয়দেব সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে যাঁরা আর্থিক সাহায্য করলেন, দীর্ঘদিন বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে এখন সেই সব পরিবারকেই না খেয়ে থাকতে হবে। ব্যবসায়ীরা ব্যাঙ্কের ঋণও শোধ করতে পারছেন না। ট্রাক মালিকেরা গাড়ির সিএফ, ফাইন্যান্স, ইনসিওরেন্স দিতে পারছেন না। কাজ না থাকায় গাড়ি লোডিং আনলোডিংয়ের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিক বিপদে পড়েছেন।’’