বিধানসভার ভোট যত এগিয়ে আসছে সভা পাল্টা সভা আর দলবদল নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে শাসকদলের এক বিধায়কের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ায় চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
যাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে তিনি জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস। আর এই পোস্টার লাগানোর অভিযোগ উঠল খোদ তৃণমূল নেতা, কর্মীদের বিরুদ্ধেই। বিশ্বনাথের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘এই বিধায়ক চাই না।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের দক্ষিণ বারাসত, বহড়ু, উওর দুর্গাপুর, হরিনারায়ণপুর, রাজাপুর করাবেগ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের নামে পোস্টার পড়তে শুরু করে। পোস্টার দেখা যায় জয়নগর ২ ব্লকের গড়দেওয়ানি, বেলে দুর্গানগর, ময়দা, ফুটিগোদা, সাহাজাদাপুর, নতুনহাট-সহ একাধিক এলাকাতেও। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার বিভিন্ন ওর্য়াডেও বিধায়কের নামে পোস্টার পড়ে। পোস্টারে লেখা হয়েছে ‘দুর্নীতিতে যুক্ত বিধায়কের পরিবর্তন চাই। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী চাই।’ আর এই পোস্টার ঘিরে জোর চাপানউতোর শুরু হয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।
জয়নগর ২ নং ব্লকের কিসান সেলের সভাপতি জুলফিকার সর্দার বলেন, “দীর্ঘ দিন এসইউসিআই-র হাতে ছিল জয়নগর কেন্দ্র। ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে তৃণমূলকে ক্ষমতায় নিয়ে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে শক্তিশালী করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান বিধায়ক দুর্নীতিগ্রস্ত। জমি ভরাট, তোলাবাজি, কাটমানি খেয়ে বেড়াচ্ছে। বুলবুলের কিট বিক্রি করে দিয়েছে। আমপানের টাকা নিয়ে স্বজনপোষণ করছেন। এলাকায় উন্নয়নের নামে মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাই উন্নয়নের স্বার্থে আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত বিধায়কের বদলে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বিধায়ক চাই।”
বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা গৌর সরকার আবার বলেন, “বিশ্বনাথ একটা কাটমানিখোর, তোলাবাজ। উন্নয়নের নামে টাকা তুলে বেড়াচ্ছেন। সরকারি টাকায়, আমপানের টাকায় স্বজনপোষণ করছেন। তাই আমি এই বিধায়কের পরিবর্তন চেয়ে জেলা ও রাজ্যস্তরে জানিয়েছি। তবু দল যদি বিশ্বনাথকে নির্বাচনের টিকিট দেয়, তা হলে আমরা ওঁর জায়গায় মানুষের কাছে গিয়ে বিবেকের ভোট চাইব। আমরা কোনওভাবেই দুর্নীতিগ্রস্ত বিধায়ককে আর চাই না।”
তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্বনাথ। পাল্টা তাঁর দাবি, “এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ দেখে ওঁরা ভয় পেয়ে ভুল বকছেন। ওঁরা দিনে তৃণমূল রাতে বিজেপি করেন। আর গৌর সরকার তো এখন বিজেপি নেতা। ওঁর সম্পর্কে বলতে আমার রুচিতে বাধে। পোস্টার লাগানোর বিষয়টি নিয়ে জেলা সভাপতিকে জানিয়েছি। এ বার দল যা বলবে সেটাই করব।”