এ পথেই প্রতি দিন যাতায়াত। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
প্রায় বছর তিনেক ধরে সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি তৈরি হয়েছিল। কাজ শেষের পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দেখা গেল গর্তে মুখ ঢেকেছে সেই রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়েই নিত্য দিন পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। এর জেরে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর (উত্তর) বিধানসভার বনহুগলি-২-এর নেপালগঞ্জ থেকে নতুনহাট রাস্তার এমনই বেহাল দশা বলে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারীদের অভিযোগ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ঠিকাদার ওই রাস্তা মেরামতের কোনও দায় নিচ্ছেন না। উপরন্তু পাওনা নিয়ে জেলা পরিষদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি আদালতে মামলা ঠুকেছেন। আড়াই কোটি টাকা খরচে তৈরি রাস্তার বেহাল দশা ঘোচাতে এখন নাজেহাল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। কারণ আদালতে ওই মামলার নিষ্পত্তি না হলে আপাতত মেরামতির সমাধান সূত্র মিলছে না বলে জানাচ্ছেন জেলা পরিষদের কর্তারা।
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুনহাট থেকে রাস্তাটির কাজ শুরু করে ওই ঠিকাদার সংস্থা। সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা তৈরিতে সংস্থাটির প্রায় তিন বছর লেগেছে। যখন নেপালগঞ্জ পর্যন্ত কাজ শেষ হল দেখা গেল, নতুনহাট থেকে বলরামপুর রাস্তার দফারফা অবস্থা
হয়ে গিয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, টেন্ডারের শর্তানুযায়ী প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা ‘সিকিউরিটি মানি’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে জমা রেখেছিল ওই ঠিকাদার সংস্থা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাস্তা খারাপ হলে ‘সিকিউরিটি মানি’ থেকেই সেই রাস্তা মেরামতের খরচ জোগানো হবে, এই শর্তেই ঠিকাদার সংস্থাকে রাস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হয়ে থাকে। জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, এ ক্ষেত্রে ঠিকাদারকে তলব করা হলেও রাস্তা মেরামতির কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি ওই সংস্থা। উপরন্তু ‘সিকিউরিটি মানি’ ফেরত পেতে জেলা পরিষদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। টাকা ফেরত না দেওয়ায় বর্তমানে আদালতে গিয়েছেন ঠিকাদার।
নগরোন্নয়ন হওয়ায় বনহুগলি-২ এলাকায় গত কয়েক বছরে জনবসতি বেড়েছে। কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই নেপালগঞ্জ-নতুনহাট। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, ‘‘অন্য কোনও তহবিল থেকে ওই রাস্তা মেরামতি করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।’’ সোনারপুর(উত্তর) বিধানসভার বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘ওই রাস্তা মেরামতের বিষয়ে একাধিক বার জেলা পরিষদে জানানো হয়েছে। কিছু আইনী জটিলতা রয়েছে শুনেছি।’’