সোমবার রাতে গোসাবা থানার পুলিশ শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের কামাখ্যাপুর নগেনদাসের মোড় থেকে চার জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গোসাবা থেকে উদ্ধার হল আগ্নেয়াস্ত্র। যাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে এলাকায়।
সোমবার রাতে গোসাবা থানার পুলিশ শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের কামাখ্যাপুর নগেনদাসের মোড় থেকে চার জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম হোসেন মোল্লা ওরফে কালো, শামসুল সর্দার, রহিদুল মোল্লা ও সঞ্জয় দাস ওরফে ভুতকুলে। ধৃতেরা সকলেই গোসাবার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও দু’টি মোটর বাইক ও পঞ্চাশ হাজার টাকা মেলে। পাঠানখালি এলাকায় বিক্রির জন্য অস্ত্রগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ক্যানিংয়ের এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এরা অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত। অস্ত্র বিক্রির জন্যই যাচ্ছিল। এই ঘটনায় আরও কারা জড়িত, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
এই ঘটনায় প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। স্থানীয় সূত্রের খবর, ধৃত মূল অভিযুক্ত হোসেন মোল্লা ওরফে কালো ও তার সঙ্গীরা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ওয়াজেদ তরফদারের ‘ছায়াসঙ্গী’ হিসাবে এলাকায় পরিচিত ধৃত চার জন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিধায়কের একাধিক মিটিং-মিছিলেও দেখা গিয়েছেকালোকে।
গোসাবা ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুবিদ আলি ঢালির দাবি, তাঁকে খুন করতেই অস্ত্র আনা হয়েছিল। সুবিদ বলেন, “আমাকে খুনের পরিকল্পনা চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। আমি এ বিষয়ে আগেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। ওয়াজেদ তরফদারের নেতৃত্বে এলাকায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপ শুরু হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থানিক।”
তৃণমূল নেতা ওয়াজেদ আবার বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। সুবিদ আলির সঙ্গে এখন আর লোকজন নেই। আমরা সকলেই বিধায়কের সঙ্গে রয়েছি, সেটা ওঁর সহ্য হচ্ছে না। তাই মিথ্যা অভিযোগ করছেন। তবে যারা ধরা পড়েছে, তারা সবাই আমার এলাকারছেলে।”
বিধায়ক বলেন, “ক্রমাগত রাজনৈতিক কর্মসূচি চলছে। সেই কর্মসূচিতে কে কখন আমার পাশে দাঁড়িয়ে, হেঁটে ছবি তুলছেন— তা লক্ষ্য করা সম্ভব নয়। যারা অস্ত্র নিয়ে কারবার করছে, তারা দুষ্কৃতী। পুলিশকে বলেছি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।”
এই ঘটনায় অবশ্য তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছারেনি বিজেপি। দলের জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, “আমরা বরাবরই বলেছি, ভোটের আগে এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করছে তৃণমূল। তা আরও একবার প্রমাণ হল।”