আঠারো দিন পর উদ্ধার হল নিখোঁজ পুত্র সন্তান

বীজপুরের তরুণী বর্ষা সরকারের অভিযোগ, হাসপাতালের বাইরে পা রাখতেই জনা কয়েক লোক তাঁদের ঘিরে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাঁর কোল থেকে সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে কেড়ে নেয় ওরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বীজপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০২:২০
Share:

মাতৃকোলে: সন্তানের সঙ্গে বর্ষা। নিজস্ব চিত্র

সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরচ্ছিলেন তরুণীটি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা। হাসপাতালের গেট পার হয়ে কিছু দূর যেতে না যেতেই হামলা।

Advertisement

বীজপুরের তরুণী বর্ষা সরকারের অভিযোগ, হাসপাতালের বাইরে পা রাখতেই জনা কয়েক লোক তাঁদের ঘিরে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে তাঁর কোল থেকে সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে কেড়ে নেয় ওরা। তারপরে দু’জনকেই বেধড়ক মারধর করে বেপাত্তা হয় ওই দলটি। তাদের মধ্যে একজন ছিল ওই তরুণীর চেনা। সে বীজপুরেরই বাসিন্দা।

ঘটনার ১৮ দিন পরে বর্ষার সেই নিখোঁজ সন্তানকে উদ্ধার করল বীজপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ঝন্টুলাল ভৌমিক নামে এক ব্যক্তিকে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। পুলিশকে ঝন্টু জানিয়েছে, তার নিজের সন্তান নেই। সে জন্যই বর্ষার সদ্যোজাতকে সে চুরি করেছিল। তাকে যাতে আইন মোতাবেক দত্তক নেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করতে উঠেপড়ে লেগেছিল সে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার সঙ্গে তাঁর স্বামী উত্তম সরকারের কোনও যোগাযোগ নেই। বর্ষার বাবা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, মাস কয়েক আগে উত্তম বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। তারপর থেকে তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই মেয়ের। মাঝে মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ হলেও কিছুদিন ধরে তাও বন্ধ।

কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে পুত্র সন্তান প্রসব করেন বর্ষা। ২২ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পরে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। সেখান থেকেই তাঁর ছেলেকে ছিনতাই করে ঝন্টুরা। বর্ষা জানিয়েছেন, ঝন্টু তাঁর স্বামীর পরিচিত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সদ্যোজাত ছিনতাইয়ের ঘটনায় উত্তমের কোনও হাত নেই।

ছেলে ছিনতাই হওয়ার পরে বাড়ি ফিরেও নিস্কৃতি মেলেনি বর্ষাদের। বাড়ি বয়ে হুমকি দিয়ে যায় ঝন্টুর দলবল। তারা শাসিয়ে যায়, পুলিশকে জানালে খুন করা হবে তাদের। দিন দু’য়েক আগে ফের হুমকি। এ বার তাদের জানানো হয়, নিজের সদ্যোজাতকে দান করে দিতে হবে ঝন্টুদের। তার জন্য ব্যারাকপুর আদালতে যেতে হবে তাঁদের। জরুরি কাগজপত্রে সই করে দিতে হবে।

এই হুমকির পরে আর বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি বর্ষারা। সটান বীজপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার রাতে ঝন্টুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাড়ি বীজপুরেরই হেলেঞ্চা গ্রামে। তাকে জেরা করে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement