শোকার্ত: মৃতের পরিবার। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র
হুকিং করে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন— সে জন্য জরিমানা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল থানায়। জরিমানা দেওয়ার পরেও পুলিশ অপমান করেছিল বলে দাবি পরিবারের। ওই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই বিমল বৈরাগী (৪৩) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।
বাড়ির লোকের দাবি, অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন বিমলবাবু। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়নি। যদিও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মীর শাস্তির দাবিতে এ দিন দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় দশ ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায়। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ অগস্ট ফলতা বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ কাটতে আউসবেড়িয়া গ্রামে যান। ওই দিন বিমলবাবু-সহ বেশ কয়েক জনের বাড়িতে অভিযান চালান তাঁরা। ওই গ্রামের বিধান বারিক, শম্ভু বৈরাগী ও বিমল বৈরাগীকে ২ অগস্ট বিদ্যুৎ দফতরে ডেকে পাঠানো হয়। তিন জনের হাতেই জরিমানার নোটিস-সহ এফআইআর কপিও দেওয়া হয়। তার দু’দিন পরে থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় ওই তিনজনকে।
বাকি দু’জন ওই দিন থানায় না গেলেও বিমলবাবু গিয়েছিলেন। তিনি এলাকার দুই তৃণমূল কর্মীকে নিয়ে থানায় যান বলে পুলিশ জানায়। মৃতের পরিবারের দাবি, ওই দিন দুই তৃণমূল কর্মীকে থানা থেকে বের করে দিয়ে বিমলবাবুর কাছ থেকে পুলিশ জরিমানার টাকা আদায় করে। এমনকী, তাঁকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেয় বলেও পরিবারের লোকেদের অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, সোমবার আলিপুর আদালত থেকে আগাম জামিন নেওয়ার কথা ছিল বিমলবাবুর। সেই মতো সকালে উঠে পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুজি শুরু হয়। বাড়ির কাছে ঝোপের মধ্যে জামগাছে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর।
পুলিশ জানিয়েছে, বিমলবাবুর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। তাঁদের দাবি, পুলিশের ভয়েই বিমলবাবু আত্মহত্যা করেছেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের দুই কর্মীও যুক্ত রয়েছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ওই তৃণমূল কর্মীরা বলেন, ‘‘আমরা শুধু বিমলবাবুর সঙ্গে গিয়েছিলাম। আমরা পুলিশ ও তাঁর মধ্যে কোনও মধ্যস্থতা করিনি।’’