সোদপুরে গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় সোমবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম লীলা কীর্তনিয়া ও অনিমেষ মণ্ডল। লীলার বাড়ি নিউ ব্যারাকপুরের হেমন্তনগরে। অনিমেষ স্বরূপনগরের গোয়ালবাথানের বাসিন্দা। মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালতে লীলার ৪ দিন ও অনিমেষের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশ জানায়, লুঠ হওয়া গয়নার কিছুটা লীলার বাড়ি থেকে মিলেছে। নিজেদের সংস্থার চিহ্ন ও হলমার্ক দেখে গয়নাগুলি শনাক্ত করেছেন সেনকো অলঙ্কার-এর কর্তৃপক্ষ। পুলিশের অনুমান, বেশিরভাগ গয়নাই বাংলাদেশে নিয়ে চলে গিয়েছে ডাকাতদলটি।
গত বছরের শেষে হরিদেবপুরের কাষ্ঠাডাঙায় একটি সোনার দোকানে একই ভাবে ডাকাতি হয়েছিল। সেখানে সিসিটিভি ফুটেজে যাদের লুঠপাট করতে দেখা গিয়েছিল, তাদের সঙ্গে ৩০ জুন সোদপুরের দোকানে আসা দুষ্কৃতীদের চেহারা ও হাবভাবের মিল পুলিশকে প্রথম সূত্রটি দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় লীলা জানিয়েছে, সোদপুরের ডাকাতিতে তার এক ভাই গোলক যুক্ত ছিল। গোলক বাংলাদেশের খুলনায় থাকে। দিন পনেরো আগে এক বার নিউ ব্যারাকপুরে এসেছিল সে। সঙ্গে ছিল গোপাল নামে আর এক জন। পুলিশ জেনেছে, গোপাল বারাসতের বাসিন্দা। বিরাটিতেও তার একটি আস্তানা আছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, লীলা স্বীকার করেছে, প্রথমে তিন জন ও তার দিন তিনেক পরে আরও তিন জন ডাকাতির জন্য বাংলাদেশ থেকে এসেছিল। এর আগেও তারা এখানে একাধিক ডাকাতি করেছিল। তবে পুলিশের অনুমান, ৩০ জুন রাতে ঘটনার সময়ে গোলক বা গোপাল দোকানের ভিতরে ছিল না।।
পুলিশের আরও অনুমান, দুষ্কৃতীরা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল, বাংলাদেশি হওয়ায় পুলিশ তাদের নাগাল পাবে না। সে কারণেই তারা মুখ না বেঁধে ডাকাতি করতে এসেছিল। তাদের কথা বলার ধরনে বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করেছিলেন দোকানের কর্মীরাই। মাস দুই আগে উত্তর ২৪ পরগণার গুমাতে একটি ডাকাতির ঘটনায় দুই বাংলাদেশিকে পাসপোর্ট-সহ ধরে পুলিশ। সোদপুরের ঘটনাতেও পুলিশ জেনেছে, দু’জনের কাছে পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল। বাকিরা বৈধ কাগজ ছাড়াই ঢুকেছিল। আরও জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের এ দেশে ঢোকা ও বার করানোর দায়িত্ব ছিল অনিমেষের। মূলত টাকার বিনিময়ে লোক পারাপার করানোটাই তার পেশা। ডাকাতির পর দিনই গোলক ও বাকিরা বাংলাদেশ ফিরে যায়। লীলার কাছে কিছু গয়না রেখে গিয়েছিল তারা। সেগুলি পাওয়ার পরেই পুলিশ নিশ্চিত হয়।