প্রতীকী ছবি।
পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে খুন করার পরে বাড়িরই জলাধারে ফেলে দেওয়া হয়েছিল মৃতদেহ। বুধবার সেই জলাধার থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতার রক্তাক্ত দেহটি। এই ঘটনায় স্ত্রীকে নৃশংস ভাবে খুনের অভিযোগে মৃতার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জগদ্দল থানা এলাকার শ্যামনগরের শান্তিগড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম প্রিয়াঙ্কা পুরকাইত (৩৬)। তাঁর স্বামীর নাম আবির পুরকাইত।
মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপরে নির্যাতন চালাত আবির। এ দিন পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই প্রতিবেশী ও পরিজনেরা আবিরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ জানান। বাড়ি থেকেই ওই যুবককে প্রথমে আটক করে জগদ্দল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে মৃতদেহ আটকে পুলিশের সামনে কিছু ক্ষণ বিক্ষোভও দেখান মৃতার পরিজনেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিগড়েই থাকেন প্রিয়াঙ্কার মাসি মায়ারানি মণ্ডল। এ দিন মৃতার পরিবারের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, প্রিয়াঙ্কাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরেই প্রিয়াঙ্কার খোঁজে আবিরদের বাড়িতে যান মায়ারানি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওদের ঘরে গিয়ে দেখলাম, প্রিয়াঙ্কা নেই। ওর স্বামী দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের ভিতরে রক্তের দাগ। ওই বাড়িতে সিঁড়ির তলায় জলের একটি রিজ়ার্ভার রয়েছে। সেটা কী, জানতে চাওয়ায় আবির নিজেই বলল, ওটা রিজ়ার্ভার। ভিতরে ওর স্ত্রী পড়ে আছে। নিজেই দেহ বার করে আনল।’’ মায়ারানি আরও বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে ওদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই খুব অত্যাচার করত আবির। নিয়মিত মারধর করত প্রিয়াঙ্কাকে। মেয়েটা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বাও ছিল। এ দিন দুপুরে বাড়িতে ভাত খেতে এসে আবির ওকে খুন করেছে। তার পরে রিজ়ার্ভারে দেহ ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ফাঁসি চাই।’’
এ দিকে, জলাধার থেকে বধূর দেহ উদ্ধারের এই ঘটনায় এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাড়ির সামনে এসে ভিড় জমান। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে জগদ্দল থানার পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। স্থানীয়দের অনেকেই অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। আবিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার মুখে ও নাকে আঘাত এবং রক্তপাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান। ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’