নজরদারি চলবে এই ক্যামেরাগুলির মাধ্যমে। নিজস্ব চিত্র ।
কয়েক বছর বন্ধ থাকার পরে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা সীমান্ত দিয়ে ফের বাংলাদেশে গরু এবং ‘ধুর’ (বেআইনি পথে মানুষ পারাপার করানো) পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে কয়েকদিন আগে। ওই সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ও পাচার ঠেকাতে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিল পুলিশ। সোমবার থেকে সেই কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাণেশ্বপুর বাজার এলাকায় এ দিন চারটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন বাগদার এসডিপিও শান্তনু ঝাঁ, বাগদা থানার ওসি গণেশ বাইন। এসডিপিও বলেন, ‘‘সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ, পাচার, বিভিন্ন ধরনর চোরাচালান বন্ধ করতে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।পর্যায়ক্রমে আষাঢ়ু বাজার, বৈকোলা বাজার, আউলডাঙা বাজার এলাকাতেও সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। তারপরেও কোথাও ওই ক্যামেরা বসানোর প্রয়োজন হলে ওসি ও আমি সমীক্ষা করে তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোল-রুম থাকছে বাগদা থানায়। সেখান থেকে পাচারকারীদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হবে। ওসি-র মোবাইলেও সিসি ক্যামেরা দেখার ব্যবস্থা থাকছে। এর ফলে পাচার বন্ধ করা যাবে বলেই পুলিশ কর্তাদের দাবি।
বাণেশ্বরপুরে সিসি ক্যামেরা বসায় স্বস্তি পাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরা। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এখান থেকে অনুপ্রবেশ, গরু পাচার চলে। ভয়ে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারি না। পুলিশ ধরপাকড় করে। এ বার সিসি ক্যামেরা বসায় পাচারকারী চিহ্নিত করতে এবং পাচার বন্ধ করতে সুবিধা হবে। এর ফলে এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ল।’’
সীমান্তে বসবাসকারীরা জানান, শীতের রাতে ও ভোরে ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে গরু পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সীমান্ত এলাকায় সর্বত্র এখনও কাঁটাতার নেই। আছে নদী সীমান্ত। সেই সুযোগটা পাচারকারীরা নেওয়ার চেষ্টা করে। দিন কয়েক আগে স্থানীয় চাষিরা অভিযোগ তুলেছিলেন, গরু পাচারকারীরা খেতের মধ্যে দিয়ে সরাসরি গরু পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। ফলে, খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গ্রামবাসী জানান, পাচারকারীরা রাজ্যের বিভিন্ন গরুর হাট থেকে বাড়িতে পোষার নাম করে বা কৃষিকাজে লাগানোর নামে গরু নিয়ে আনে। তারপর তা সীমান্তে গোপন এলাকায় জড়ো করে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের থেকেও পাচারকারীরা গরু কিনে নেয়। রোজ নয়, সপ্তাহে এক-দু’দিন সুযোগ বুঝে পাচার হয়।
গ্রামবাসীদের দাবি, গরুর পাশাপাশি বাগদা সীমান্ত দিয়ে ‘ধুর’ পাচার চক্রও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সিন্ডিকেট তৈরি করে ‘ধুর’ পাচার চলে। দলালদের টাকা দিয়ে চলে বেআইনি অনুপ্রবেশ। দু'দেশেই দালাল চক্র সক্রিয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিনে বাগদা থেকে ২৭ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।