ভষ্মীভূত বস্তি পরিষ্কার করার কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
দ্রুত ঘর তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন— চাইছেন হাবড়ার রেলবস্তিতে আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানুষজন। বুধবার বিকেলে আগুন লাগার ঘটনায় ৩৩টি ঘর পুড়েছে। কার্যত নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন অনেকে। পরনের পোশাকটুকু ছাড়া আর কিছুই বাঁচাতে পারেননি অনেকে। ক্ষতিগ্রস্ত ১২০ জন মানুষকে আপাতত রাখা হয়েছে হাবড়া মডেল হাইস্কুলে।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ত্রাণ শিবিরে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সকালে পাঁউরুটি, কলা, লাড্ডু দেওয়া হচ্ছে। দুপুরে ভাত, ডাল, মাছের ঝোল, বিকেলে মুড়ি-চানাচুর, বিস্কুট এবং রাতে ভাত, ডাল, সয়াবিনের তরকারি দেওয়া হচ্ছে। পুরসভার পক্ষ থেকে গরম পোশাক, চাদর ও কম্বল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, দেওয়া হয়েছে গামছা, বালতি। এলাকার কিছু মানুষও পোশাক দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
আশ্রয় শিবিরে থাকা মানুষেরা শুক্রবার বলেন, ‘‘আমরা দ্রুত নিজেদের জায়গায় ফিরে যেতে চাই। প্রশাসনের কাছে আবেদন ঘর দ্রুত বানিয়ে দেওয়া হোক।’’
সুকুমার মোড়ল নামে ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমরা চাই ঘর তাড়াতাড়ি তৈরি হোক। ছেলেমেয়েদের বইখাতা পুড়ে গিয়েছে। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সকলের কাছে আবেদন বইখাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’’
এদিন আশ্রয় শিবির থেকে বেরিয়ে অনেকে দিনমজুরির কাজে গিয়েছেন। এক যুবকের কথায়, ‘‘আপাতত খাওয়া-থাকার অসুবিধা না হলেও আগামী দিনে তো নিজেদেরটা নিজেদেরই চালাতে হবে। হাতে টাকা না এলে কী ভাবে চলবে!’’
এ দিন রেলবস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, পুরকর্মীরা পোড়া পোশাক, লেপ, পুড়ে যাওয়া মালপত্র সরিয়ে জায়গা সাফ করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরাও সেই কাজে হাত লাগিয়েছেন। এ দিনও দেখা গেল, অনেকে পোড়া ঘরে কিছু আস্ত আছে কিনা, তা খুঁজছেন। পোড়া টিন, লোহালক্কর সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। অনেকে পোড়া টাকা নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমাদের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’’ পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে ৩৩টি বাড়ির তালিকা পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই অনুমোদন হয়ে যাবে। আমরা চাইছি, যাতে দ্রুত ওঁরা নিজের জায়গায় ফিরতে পারেন।’’