যশোর রোডের উপরে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে শুকনো ডাল। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
কালবৈশাখীর মরসুম। যথারীতি যশোর রোডের দু’ধারের প্রাচীন গাছের (মূলত শিরীষ) বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে পড়া শুকনো ডাল নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে গাড়িচালক ও সাধারণ মানুষের। কারণ, মাঝেমধ্যেই ডাল ভাঙছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাতায়াত। গত কয়েক বছরে ওই সব প্রাচীন গাছের শুকনো বা মরা ডাল ভেঙে হতাহতের সংখ্যা কম নয়। ফলে, অবিলম্বে ওই সব ডাল ছাঁটার দাবি তুলছেন সাধারণ মানুষ। একই দাবিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বন দফতর ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বনগাঁ পুরসভাও।
ইদানীং ঝড়বৃষ্টির সময় গাড়িচালক বা সাধারণ পথচারীরা যশোর রোড কার্যত এড়িয়ে চলছেন। রাস্তার পাশের দোকানিরাও ঝড় উঠলে প্রমাদ গোনেন। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, ডাল ভেঙে কোনও বিপত্তি হলে তারপর কিছুদিন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ডাল কাটে। তারপর বন্ধ করে দেয়।
পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘শহরে যশোর রোডের পাশে প্রায় ৩৫টি গাছ মরে শুকিয়ে গিয়েছে। ওই সব গাছের ডাল দ্রুত কাটা প্রয়োজন। না হলে যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই ওই সব গাছ এবং ডাল কাটুক না হলে পুরসভাকে অনুমতি দিক।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বাস্তুকার (ডিভিশন-৫) অজিত সিংহ জানান, এ ভাবে পুরসভাকে শুকনো মরা ডাল কাটার অনুমতি দেওয়া যায় না। তবে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র কোনও নির্দিষ্ট একটি-দু’টি শুকনো ডাল কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, ‘‘বিপজ্জনক শুকনো মরা ডাল আমরা কেটে দিচ্ছি। নিয়মিত ভাবে মরা শুকনো ডাল কাটতে কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ওই রাস্তার ধারের শুকনো ও মরা গাছ এবং ডাল ছাঁটা নিয়ে সভা হয়। তাতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পেট্রাপোল থেকে কলাসীমা বাজার পর্যন্ত ওই সড়কের গাছের বিপজ্জনক ডাল চিহ্নিত করে কাটা বা ছাঁটা হবে। বনগাঁ পুর এলাকায় চিহ্নিত করার কাজ করবে বন দফতর। সে তথ্য ওই দফতরের থেকে নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বনগাঁ পুরসভাকে জানাবে। পুরসভা নিজস্ব খরচে সেই গাছ এবং ডাল কাটবে। প্রয়োজনে বনগাঁর বিভিন্ন স্কুলের জন্য চেয়ার এবং বেঞ্চ তৈরিতে ব্যবহার করা হবে সেই কাঠ।
কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত মতো কাজ হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুরপ্রধান। তিনি জানান, ১৯৯৩ সালের পশ্চিমবঙ্গ পুর আইন অনুযায়ী পুরসভাগুলিকে পুর এলাকার মধ্যে এই ধরনের বিপজ্জনক গাছ বা গাছের ডাল কাটার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নিজেরাই যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে কাজটি করছে না। পুরসভাকেও করতে দিচ্ছে না।
জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, যশোর রোড জাতীয় সড়ক। সেখানে গাছ বা ডাল কাটার সিদ্ধান্ত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই নেয়।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে