চোঙার আওয়াজে নাজেহাল পড়ুয়ারা, চুপচাপ প্রশাসন

রাস্তার দিকে দিকে বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোনের খুঁটিতে লাগানো হয়েছে চোঙা। তাতে তারস্বরে বাজানো হচ্ছে গান। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেই গান চলছে। সেই চোঙার আওয়াজে বনগাঁ এবং হাবরার মানুষেরা নাকাল হচ্ছেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩২
Share:

মাইকের তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার দিকে দিকে বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোনের খুঁটিতে লাগানো হয়েছে চোঙা। তাতে তারস্বরে বাজানো হচ্ছে গান। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেই গান চলছে। সেই চোঙার আওয়াজে বনগাঁ এবং হাবরার মানুষেরা নাকাল হচ্ছেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, ক্লাবের কোনও অনুষ্ঠানই হোক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবেতেই বাজানো হচ্ছে চোঙা। সরকারি অনুষ্ঠানেও ওই চোঙা বাজানো হয়। গোটা শহরটাকেই প্রায় চোঙা দিয়ে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এই আওয়াজে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন প্রবীণেরা। সদ্যোজাতদেরও সমস্যা হচ্ছে। চোঙার তাণ্ডবে পড়ুয়াদেরও অসুবিধা হচ্ছে। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। তা ছাড়া অনেক স্কুলেই এখনও বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। কেউ ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না বলে অভিযোগ। বনগাঁর মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘এ বার শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’ এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাবার কথায়, ‘‘রাতে বাড়ি ফিরলেই ছেলে প্রশ্ন করছে বাবা চোঙার আওয়াজ কবে বন্ধ হবে। কোনও উত্তর দিতে পারছি না। লেখাপড়া লাটে উঠতে বসেছে।’’ এলাকার মানুষ জানান, রাস্তায় গাড়ির হর্নের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না। যখন তখন ঘটতে পারে বিপদ। কারও সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে না। এমনকী মোবাইল বাজলে তাও শোনা যাচ্ছে না।

হাবরায় ব্যবসার কাজে বহু মানুষের যাতায়াত আছে। এমনিতেই যানজটের জন্য মানুষ এখানে নাকাল হন। তার মধ্যে চোঙার আওয়াজে অতিষ্ঠ মানুষ। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘চোঙার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

শীতের মরসুম শুরু হতেই বনগাঁ শহর জুড়ে শুরু হয়েছে চোঙার তাণ্ডব। চলছে চোঙা বাঁধার প্রতিযোগিতাও। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতাদের সঙ্গে জোরে জোরে কথা বলতে হচ্ছে। না হলে তাঁরা কিছু শুনতে পাচ্ছেন না। শহরের বাসিন্দা তথা কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণপদ চন্দ বলেন, ‘‘শব্দ দূষণের ফলে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। দ্রুত মুক্তি চাই আমরা। কিন্তু প্রশাসন চুপচাপ।’’ অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন। ১০টি চোঙার অনুমতি মেলে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি চোঙা বাঁধা হচ্ছে। তা ছাড়া, ৬৫ ডেসিবেলের বেশি আওয়াজে চোঙা বাজলেও তার মাপার মতো পরিকাঠামো পুলিশের নেই। অনেক সময়ে অনুমতি ছাড়াও চোঙা বাজছে। পুলিশের নজরদারি নেই বলেই তা সম্ভব বলে অভিযোগ। বনগাঁ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই ওই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকও করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement