বনগাঁ ব্লক অফিসে বিক্ষোভ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
আমপানের ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা নেওয়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা।
সোমবার দুপুরে দেগঙ্গা ব্লক দফতরের সামনে টাকি রাস্তা আটকে বিক্ষোভের জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। টাকি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে শান্ত করে।
আমপানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল দেগঙ্গা ব্লকে। ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেই টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকে পাননি। বরং টাকা পেয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর পরিবারের লোকজন। এই নিয়ে দেগঙ্গায় একাধিকবার ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে।
রাজ্য সরকার নতুন করে আবেদন জমা নিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য অনেকে আবেদন জমা দিতে পারেননি বলে এ দিন দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ দিন তাঁরা বাড়ি ভাঙার ছবি-সহ ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র ব্লক দফতরে জমা দিতে গেলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, এ কাজের জন্য নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে়। তারই প্রতিবাদে টাকি রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
একই দাবিতে বাদুড়িয়ার ব্লক দফতরের সামনেও এ দিন বিক্ষোভ দেখান গ্রামের কিছু মানুষ। কাজল মণ্ডল, সফিয়া খাতুন, রতন সাহা, অহাব গাজিরা বলেন, ‘‘লকডাউন কিংবা ঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য যে ভাবে মাইকে প্রচার করা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত গরিব মানুষ যাতে ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন— তা নিয়ে মাইক সে ভাবে প্রচার হল না। এত বড় এলাকার সব মানুষ ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র এত তাড়াতাড়ি জমা দিতে আসতে পারেননি।’’
ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশ মতো, গত ৬ ও ৭ অগস্ট দ্বিতীয় দফায় আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ব্লক দফতরের কর্মীরা তদন্তের কাজও শুরু করেছেন। গ্রামবাসীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আমপানে ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র জমা নিতে হবে, এই দাবি তুলে বনগাঁ বিডিও অফিসে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান কিছু মানুষ। তাঁদের দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও তাঁরা সরকারি টাকা পাননি। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আবেদন জমা নেওয়া হলেও তাঁরা তা জানতে পারেননি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিনে ব্লক অফিসে প্রায় ১৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। ওই দু’দিন যে আবেদন জমা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে গ্রামে মাইকে প্রচারও করা হয়েছিল। ফলে কেউ জানতেন না, এমন হতে পারে না।
প্রশাসনের অনুমান, এ দিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের কোনও ভাবে ভুল বুঝিয়ে পাঠানো হয়েছিল। বনগাঁর বিডিও সঞ্জয়কুমার গুছাইত বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে দু’দিন আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে। এখন আবেদন জমা নেওয়ার কোনও সরকারি নির্দেশ নেই।’’ একই দাবিতে এ দিন কিছু মহিলা মহকুমাশাসকের অফিসের সামনেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কোনও জায়গাতেই শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় ছিল না বলে অভিযোগ।