দোকানে ভরা প্ল্যাটফর্ম, সমস্যায় যাত্রীরা

নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, মডেল স্টেশন হলেও যাত্রীদের বসার জায়গা, পাখা, পানীয় জলের মতো স্বাচ্ছন্দ্যের ন্যূনতম উপাদানগুলি মেল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৪
Share:

অব্যবস্থা: দোকানের জটে জেরবার যাত্রীরা। ছবি: সুদীপ ঘোষ

প্ল্যাটফর্মে সার দিয়ে দোকান। সামান্য জায়গা ফাঁকা। সেখানেই ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। চার নম্বর প্ল্যাটর্ফমে ঢুকল বনগাঁ লোকাল। ঠেলাঠেলিতে অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারলেন না। হুমড়ি খেয়ে একটি দোকানের সামনে পড়ে গেলেন এক মধ্যবয়সী মহিলা। আর একটু হলে লাইনেই পড়ে যেতেন ওই মহিলা।

Advertisement

ছবিটি বারাসত স্টেশনের। এটি এই শাখার অন্যতম ব্যস্ত জংশন স্টেশন। কাগজে-কলমে এটি ‘মডেল’ স্টেশন। অথচ সেই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের মাঝ বরাবর রেললাইনের দিকে মুখ করে সার দিয়ে দোকান তৈরি হয়েছে। নানা ধরনের খাবার নিয়ে ঝাঁকা সাজিয়ে বসে আছেন হকাররা। কয়েকটি দোকানে অগ্নিবিধি শিকেয় তুলে গ্যাসের সিলিন্ডার জ্বালিয়ে বিশাল উনানে ভাঁজা হচ্ছে পরোটা, চাউমিন।

শিয়ালদহ থেকে বারাসত স্টেশনে এসে ট্রেন বনগাঁ বা বসিরহাটের দিকে যায়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, মডেল স্টেশন হলেও যাত্রীদের বসার জায়গা, পাখা, পানীয় জলের মতো স্বাচ্ছন্দ্যের ন্যূনতম উপাদানগুলি মেল না। উল্টে প্ল্যাটফর্মে থাকা দোকানগুলির জন্য ঠিকমতো ওঠা-নামা করা যায়। এমনকী দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থেকে যায়।

Advertisement

নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এই স্টেশনে জবরদখল ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্ল্যাটফর্মের মাঝ বরাবর দোকান। তার দু’পাশে হকার বসে থাকে। ফলে যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গাটি এমনই সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে যে বিপজ্জনক ভাবে ওঠা-নামা করতে হয়। সব ট্রেন এখনও ১২ কামরার হয়নি। কিন্তু সেই জন্য প্ল্যাটফর্মের সম্প্রসারণ হয়েছে। সেই সম্প্রসারিত অংশও হকারদের দখলে চলে গিয়েছে। এক চিলতে ফুটওভার ব্রিজটিও ভবঘুরেরা দখল করে নিয়েছেন বলে জানান নিত্যযাত্রীরা। কয়েক বার উচ্ছেদের অভিযান চললেও কয়েক দিন পরে আবার দোকান বসে যায়।

বারাসত স্টেশনে হকার বসানোর পিছনে রাজনৈতিক দল ও রেল পুলিশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। এই স্টেশনের অধিকাংশ হকার আইএনটিটিইউসি-র শিয়ালদহ ডিভিশনের হকার্স ইউনিয়নের সদস্য। এই ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি তাপস দাশগুপ্তের পাল্টা অভিযোগ, “কয়েক জন হকারকে চিহ্নিত করে রেখে দেওয়া কথা আমরা বলেছিলাম। বাকিদের তুলে দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলাম। রেল সে কথায় আমল দেয়নি।’’

এ ব্যাপারে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “খুব শীঘ্রই ওই শাখায় হকার উচ্ছেদের কাজ শুরু হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এই কাজ করা হবে।’’ তবে যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই এমন প্রতিশ্রুতি দেয় রেল। কখনও ঢাকঢোল পিটিয়ে হকার উচ্ছেদের অভিযানে নামাও হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement