ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ে ফের প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল।
দলীয় কর্মিসভাতেই তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানালেন তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা। শনিবার ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের সুকপুকুর স্কুল মাঠে কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড় বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রেজাউল করিম, ভাঙড় ২ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান-সহ অন্যান্যরা। ওই সভায় বেঁওতা ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা এলাকার তৃণমূল নেতা সত্যজিৎ মণ্ডল ওরফে পাঁচু মণ্ডল বলেন, “আরাবুল যেহেতু বিধানসভা ভোটে টিকিট পাননি, সে কারণে চক্রান্ত করে দলীয় প্রার্থী রেজাউল করিমকে হারিয়ে দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আইএসএফ ও বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা বলেন। এর আগেও তিনি রেজ্জাক মোল্লাকে হারানোর চক্রান্ত করেছিলেন।” তাঁর অভিযোগ, “আরাবুল তোলাবাজ। বাসন্তী হাইওয়ের উপরে গরুর গাড়ি থেকে টাকা তুলছেন। ভাঙড়ে রেজাউল করিম জিতলে তাঁর তোলাবাজি বন্ধ হয়ে যেত।”
গত কয়েকদিন ধরেই ভাঙড়ের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০টি পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে সভা করছেন আরাবুলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতারা। সম্প্রতি তৃণমূলের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলাম ও জেলা পরিষদ সদস্য নান্নু হোসেনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, এরপরেই ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। সে কারণে আরাবুলকে বাদ দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতারা একত্রিত হয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তির পরীক্ষায় নেমেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভোট মিটে যাওয়ার পরে তাই ব্লক সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে গোষ্ঠীকোন্দল।
পাঁচু মণ্ডলের অভিযোগ উড়িয়ে এ দিন আরাবুল বলেন, “পাঁচু আমাদের দলের কেউ নয়। ও বেঁওতায় আমাদের দু’জন দলীয় কর্মী খুনের আসামি। জেল খেটে বাড়ি ফিরেছে। দল সবটাই জানে। আমার বদনাম করতে মিথ্যে কথা বলছে। মানুষ এর বিচার করবেন।” গরু পাচারের টাকা তোলার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
ভাঙড় ২ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম অবশ্য বলেন, “আরাবুল আমাদের কাউকে সম্মান দেন না। তাই আমরাও তাঁকে বাদ দিয়ে চলতে চাই। আমরা কোনও দুর্নীতিগ্রস্ত নেতার সঙ্গে আপোষ করব না।” রেজাউলের কথায়, “ভাঙড়ে আমাকে হারানোর ক্ষেত্রে দলে অন্তর্ঘাত ছিল। দল পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে আমি চাই সকলকে নিয়ে চলতে।” আরাবুলের নাম না করে তিনি বলেন, “ভাঙড়ের একজন নেতা আমাকে এলাকায় ঢুকতে দিতে চান না। তিনি আমার নামে বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করছেন। আমি সবটাই দলকে জানিয়েছি।”