Death

Death: গঙ্গার ধারে বিস্ফোরণ, তরুণের মৃত্যু হালিশহরে

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ হালিশহরে হুকুমচাঁদ চটকলের পাঁচিল লাগোয়া গঙ্গার ধারে জগন্নাথ ঘাটে ওই বিস্ফোরণ ঘটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:২১
Share:

বিস্ফোরণে এ ভাবেই উড়ে গিয়েছে  টিনের চাল। ইনসেটে, সুমিত সিংহ। নিজস্ব চিত্র।

দুপুরে নিজের বাসভবনে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন নৈহাটির হুকুমচাঁদ চটকলের সিইও সমীরকুমার চন্দ্র। আচমকাই বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে হতবাক হয়ে যান তিনি। দেখেন, তাঁর বাসভবন লাগোয়া অতিথিশালার গ্যারাজের টালির চালে পড়ে আছে একটি রক্তাক্ত দেহ। চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্ত পড়ছে মাটিতে। সমীরবাবুই ফোন করেন পুলিশকে। এই ঘটনায় বিট্টু জায়সওয়াল নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ হালিশহরে হুকুমচাঁদ চটকলের পাঁচিল লাগোয়া গঙ্গার ধারে জগন্নাথ ঘাটে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে এক তরুণের মৃত্যু হয়। সুমিত সিংহ (১৯) নামে ওই তরুণের দেহই বিস্ফোরণের জায়গা থেকে প্রায় কুড়ি ফুট উপরে গ্যারাজের চালে এসে পড়েছিল। সে সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আরও দু’জন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। রাতে ঘটনাস্থলে যান ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, তার পাশেই একটি ক্লাব আছে। বিট্টু জায়সওয়াল নামে এক জনের বাড়িও সেখানে। বিট্টুর নামে অনেক অভিযোগ আছে। বিস্ফোরণে এক জন মারা গিয়েছেন। নিখোঁজদের খোঁজ করা হচ্ছে। কিন্তু সবার আগে আমরা জোর দিচ্ছি ফরেন্সিক পরীক্ষায়। তাতে তদন্তে সুবিধা হবে।’’ গত লোকসভা নির্বাচনের পরে ব্যারাকপুরের চিড়িয়ামোড়ে এই বিট্টুকেই এক সাংসদের গাড়ি থেকে নামিয়ে আটক করেছিলেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর।

চটকলের কর্তা সমীরবাবু বলেন, ‘‘হালিশহর আর নৈহাটির মাঝখানে এই জগন্নাথ ঘাট। ঘাটের কাছে যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি আগে আমাদের চটকলেরই জমি ছিল। পরে তা পোর্ট ট্রাস্টকে হস্তান্তরিত করা হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই সেখানে নানা রকম অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। মাঝে মাঝে তারস্বরে ডিজে বক্স বাজিয়ে খাওয়াদাওয়াও হয়। এ দিন ঘটনার পরে তড়িঘড়ি রক্তাক্ত ওই যুবককে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হলেও বাঁচানো যায়নি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সুমিত স্থানীয় কোনা কলোনির বাসিন্দা ছিলেন। এ দিন ওই জমিতে ক্রিকেট খেলছিলেন কয়েক জন। সুমিত বা নিখোঁজ দু’জনও তাঁদের মধ্যে ছিলেন কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

Advertisement

এ দিকে, বিস্ফোরণ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়, ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ বিট্টুই এই ঘটনায় জড়িত। বিজেপি-র সমর্থকেরাই বোমা বানিয়ে মাটির তলায় রেখেছিল। তা ফেটে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি অবশ্য শাসকদলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘বিট্টুর বাড়ি লাগোয়া ওই জমিতে বিজেপি-র দুষ্কৃতীদের একটি ঠেক রয়েছে। ওরা বোমা তৈরি করে মাটির তলায় পুঁতে রেখেছিল। তা থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এক জন তরুণ মারা গিয়েছেন। বিস্ফোরণের পরে রোহিত চৌধুরী ও রোহিত সিংহ নামে আরও দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁরাও ক্রিকেট খেলছিলেন। আমরা পুলিশকে বলেছি, এই বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

অন্য দিকে, বিজেপি-র ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্কই নেই। আসলে পুরভোটের আগে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নিজেদের মধ্যেই নানা ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ সব তারই নমুনা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement