কাঁকিনাড়ার কেউটিয়ায় ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে গাছ।
কালবৈশাখীর দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হল নৈহাটি ও তার আশেপাশের এলাকার শ’পাঁচেক বাড়ি।
নৈহাটি শহর ও সংলগ্ন জেঠিয়া, নারায়ণপুর, শিবদাসপুর, কেউটিয়া, বড়া গ্রামের অসংখ্য কাঁচা বাড়ি এবং টিন ও টালির চালের বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির উপর বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে, আবার কোথাও গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। এর মধ্যে দেড়শো বাড়ি একেবারেই ভেঙে গিয়েছে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে ত্রিপল পাঠানোর ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। রবিবার দুপুরের পরেই আচমকা ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়। ব্যারাকপুর মহকুমার বিভিন্ন অঞ্চলে শিলাবৃষ্টিও হয়। নৈহাটির বাসিন্দা শেখ নাসির হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের পুরনো বাড়ি। বিকেল নাগাদ প্রবল ঝড় শুরু হল। তার সঙ্গে শিলা বৃষ্টি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই টালির চাল ভেঙে পড়ল।’’ খুঁটি ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে রাস্তার উপর। গাছের ডাল ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামগুলিতে কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়লেও হতাহতের কোনও খবর নেই রাত পর্যন্ত। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, ‘‘আমরা আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে তাড়াতাড়ি বিদ্যুতের লাইন মেরামত করিয়ে জল ও আলোর ব্যবস্থা করছি। যাঁদের ঘর একবারে ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের আপাতত থাকার বিকল্প ব্যবস্থা করছি।’’ ওই সময় বিকেলের দিকে রাস্তায় থাকা লোকজন তড়িঘড়ি কাছাকাছি দোকান ও বাড়িতে আশ্রয় নেন। ঝড়-বৃষ্টির পরে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক লোকজন নিয়ে রাস্তায় নামেন পরিস্থিতি সামলাতে। গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করান। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানানো হয়েছে, নৈহাটির বহু জায়গায় নতুন করে বিদ্যুতের তার টানতে হচ্ছে। রাতের মধ্যে জরুরি পরিষেবা দেওয়া গেলেও সর্বত্র বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। স্থানীয় বিধায়ক পার্থবাবুও বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধিনিষেধ মেনে আমরা সব রকমের সাহায্যের চেষ্টা করছি।’’
ঝড়ে নৈহাটির গ্রামগুলিতে চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধানের জমিতে ধানগাছ শুয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ আম বাগানে আম ঝরে পড়েছে। সব্জির ক্ষতি হয়েছে বেশি। পাটের জন্য যে জমি তৈরি হয়েছিল, তাতে জল জমে যাওয়ায় আবার নতুন করে লাঙল দিতে হবে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। কৃষিবিজ্ঞানী অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঝড়-বৃষ্টিতে যা ক্ষতি হল এরপরে রোদ উঠলে পোকার আক্রমণে আরও বেশি ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। অবিলম্বে চাষিদের জৈব কীটনাশক ব্যবহার শুরু করতে হবে।’’