পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
চলতি অর্থবর্ষ প্রায় শেষের মুখে। অথচ পানিহাটি পুরসভায় কবে বাজেট পেশ হবে, তা কেউ জানেন না। শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিদের একাংশেরই সংশয়, ‘‘বাজেট বোধহয় হবে না।’’
সূত্রের খবর, শাসকদলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে এখন চাপা পড়েছে পানিহাটি পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম ও নাগরিক পরিষেবা। ফলে আগামী অর্থবর্ষের রূপরেখা তৈরি নিয়ে কারও হেলদোল নেই। যদিও পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সুভাষ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সমস্ত দফতরের থেকে আগামী বছরের খরচের খতিয়ান নিয়ে, তা সই করে প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে জানাবেন পুরপ্রধান।’’ কিন্তু তা কোনও পুরসভার বাজেটের নিয়ম হতে পারে না বলেই দাবি তৃণমূল পুর প্রতিনিধিদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, চলতি আর্থিক বছরে কোন কোন খাতে পুরসভার কী আয়-ব্যয় হয়েছে, তার খতিয়ান বাজেটে তুলে ধরতে হয়। আগামী অর্থবর্ষে কোন কাজে কত টাকা খরচ হতে পারে, সেটাও বাজেটে পেশ করতে হয়। পুরসভার ফিনান্স কমিটির কাছে সেই তথ্য গেলে তৈরি হয় আগামী বছরের বাজেট। পুর-বোর্ডের বৈঠকে সেই বাজেট প্রস্তাব পেশ হয়। দিন কয়েক পরে ফের বৈঠকে সেই বাজেট পাশ হয়। এর পরে পুরপ্রধান আর্থিক তহবিলের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে জানান। পুরপ্রতিনিধিদের একাংশের কথায়, ‘‘পুরপ্রধান নিজের মতো করে সই করে পাঠাতে পারেন না। বাজেট না হলে আগামী অর্থবর্ষে কাজের রূপরেখাও তৈরি হবে না।’’
বর্তমান পুরপ্রধান মলয় রায়ের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে জানুয়ারিতে বোর্ডের বৈঠক বয়কট করেছিলেন পুরপ্রতিনিধিরা। তার পরে আর কোনও বৈঠক হয়নি। এক পুরপ্রতিনিধির কথায়, ‘‘বাজেট তো বোর্ড অব কাউন্সিলরদের সামনে পেশ করতে হবে। কিন্তু বৈঠকে কেউ না এলে বাজেট পেশ হবে কী ভাবে?’’
অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে পানিহাটির নাগরিক পরিষেবা কার্যত খুঁড়িয়ে চলছে। তার উপরে বাজেট না হলে উন্নয়ন কী ভাবে হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় সিপিএম নেতা শুভব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভা কয়েক জনের ব্যক্তিগত বাড়িতে পরিণত হয়েছে। কোনও পরিষেবা নেই। তাই বাজেট পেশের ক্ষমতাও নেই।’’ বিজেপি নেতা কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দিশাহীন পুরসভা আগামীর দিশা দেখাতে পারবে না, সেটাই স্বাভাবিক।’’