পায়ে-পায়ে: নিজস্ব চিত্র
দিনের পর দিন ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। পুরসভা থেকে মশা মারার কাজও শুরু করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ পুরসভার দাবি, এখনও মানুষ ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতন নন।
সে জন্য বুধবার কাউন্সিলর, স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী, স্কুল পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে বনগাঁ শহরে বিশেষ সচেতনতা পদযাত্রা করল পুরসভা। এ দিন ওই পদযাত্রা থেকে ডেঙ্গি সম্পর্কে লিফলেটও বিলি করা হয়। অটোতে করে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচারও করা হয়েছে।
এ দিন পুরসভার পক্ষ থেকে হাসপাতাল চত্বরে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলাও হয়েছে। হাসপাতালে জ্বর নিয়ে এসে কেউ কোনও অসুবিধার মধ্যে পড়লে যোগাযোগ করতে পারবেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গরিব মানুষ টাকার অভাবে রক্ত পরীক্ষা না করাতে পারলে পুরসভার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে তাঁর রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে জানান পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য।
তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় কোথাও কোনও জল যাতে না জমে থাকে তার জন্য ১১টি পাম্প মেশিন কেনা হয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে হোয়্যাটস্ অ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে। মানুষ সেখানেও তাঁদের অসুবিধার কথা জানাতে পারবেন।’’
বনগাঁ মহকুমা হাসাপাতালে এ দিনই পুরসভার পক্ষ থেকে জ্বর নিয়ে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো, মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় সহ চিকিৎসকেরা ছিলেন। রোগী ও তাঁদের আত্মীয় পরিজনদের ডেঙ্গি বিষয়ে বোঝানো হয়। চিকিৎসকেরা বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মানে মৃত্যু নয়। কেউ ভয় পাবেন না। রক্তে এসএস১ পজেটিভ হলে বেশি করে জল খান।’’ বমি থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগীকে মশারির মধ্যে রাখতে হবে। আর কেউ বাড়িতে জল জমতে দেবেন না বলে তাঁরা জানান।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘জ্বর হলে পুরসভার স্বাস্থ্যদ্বীপ বা হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করুন। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে গেলে তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।’’
এ দিন মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে পুরসভার পক্ষ থেকে মশা মারার তেল ও চুন ছড়ানো হয়। কামানও দাগা হয়েছে। কাউন্সিলরেরাও ওই কাজে হাত লাগান। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের নিকাশি নালায় এখনও জল জমে রয়েছে। তাতে মশার লার্ভা ভাসছে। সেখানেও তেল, ব্লিচিং, চুন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পাশাপাশি এ দিন সকাল থেকে শহরের ১৬টি হাইস্কুল ও ৪৯টি প্রাথমিক স্কুলেও মশা মারার কাজ হয়েছে।
বুধবার বনগাঁ হাইস্কুল ও কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসাতে মশা মারা হয়েছে। পদযাত্রায় যোগ দেওয়া বনগাঁ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বাপ্পাদিত্য দাস, সুরাজ নাথ ও সায়ন্তন দত্ত বলেন, ‘‘ডেঙ্গি সম্পর্কে আজ অনেক কিছু জানতে পারলাম। বাড়িতে গিয়ে কোথাও আর জল জমতে দেব না।’’