কাশ্মীরের বাড়িতে রুবিনা। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি ছেড়ে প্রায় এক যুগ আগে কাশ্মীরে চলে গিয়েছিলেন কুলতলির বাসিন্দা রুবিনা বিবি। তারপর থেকে পরিবারের সঙ্গে কার্যত আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। পুলিশ ও হ্যাম রেডিয়োর সাহায্যে এত দিন পরে কুলতলিতে বাবা-মায়ের খোঁজ পেলেন কাশ্মীরের বধূ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেবেলায় এক কাকার সঙ্গে কাশ্মীরে যান রুবিনা। সেখানেই পাত্র খুঁজে রুবিনার বিয়ে দিয়ে ফিরে আসেন সেই কাকা। কাশ্মীরের বারামুলায় সংসার শুরু করে নাবালিকা মেয়েটি। বর্তমানে বছর চব্বিশের রুবিনার তিন সন্তান রয়েছে। বিয়ের পরে চেষ্টা করেও বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগই করতে পারেননি তিনি। এ ভাবেই কেটে গিয়েছে প্রায় বারো বছর। পরবর্তীকালে সেখানকার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে জাতীয় মহিলা কমিশনে চিঠি লেখেন রুবিনা। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ার আবেদন করেন।
অনেক ছোটবেলায় এলাকা ছাড়ায়, নিজের ঠিকানা সে ভাবে জানতেন না রুবিনা। শুধু সুন্দরবনটুকু মনে ছিল তাঁর। তার উপরে ভরসা করেই খোঁজ শুরু করে পুলিশ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় হ্যাম রেডিয়ো। বুধবার কুলতলির দেউলবাড়িতে রুবিনার পরিবারের সন্ধান মেলে। পুলিশের তরফে তাঁর বাবা, মা-সহ বাড়ির লোকজনকে থানায় নিয়ে এসে ভিডিয়ো কলে কথা বলানো হয় রুবিনার সঙ্গে। দু’পক্ষই নিজেদের চিনতে পারে। এত দিন পরে দেখা হওয়ায় আবেগে ভেসে যান সকলে। দ্রুত মাকে নিয়ে কাশ্মীরে যাবেন বলে জানান রুবিনার ভাই।
হ্যাম রেডিয়োর তরফে অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, “মহিলা প্রথমে শুধু সুন্দরবনের কথা বলেন। আরও জিজ্ঞেস করতে জয়নগর স্টেশন, কাঁটামারি স্কুলের কথাও আবছা মনে করতে পেরেছিলেন। তা দিয়েই শুরু হয় খোঁজ।” কুলতলি থানার আইসি অর্ধেন্দুশেখর দে সরকার বলেন, “মেয়েকে দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন মা। কিন্তু পরিবারটি খুবই গরিব। আমরা চেষ্টা করছি ওঁদের কাশ্মীরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে।”