উৎসবে নৃত্যানুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
ফাঁকা মাঠে একটি বড় মঞ্চ। দর্শকাসনে হাজার দু’য়েক মানুষ। চলছে একের পর এক শিল্পীর অনুষ্ঠান। রবীন্দ্র সঙ্গীত, আধুনিক, বাউল কী নেই গানের তালিকায়। ছ’হাজার সাতশ জন শিল্পী এ বার এই মঞ্চে গান গাইছেন, নাচছেন।
২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে শ্যামনগর উৎসব। এই উৎসব এ বার ১১ বছরে পড়ল। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের মতো কলকারখানায় ঘেরা ঘিঞ্জি এলাকাতেও সংস্কৃতি চর্চার চল ছিল তাল মিলিয়েই। কিন্তু তার প্রকাশ ছিল না উদ্যোগের অভাবে। ভাটপাড়া পুরসভার উপ পুরপ্রধান সোমনাথ তালুকদার এই উৎসব শুরু করেন। শ্যামনগর উৎসব প্রথমে শুরু হয়েছিল স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে। এখন এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে শিল্পীরা অনুষ্ঠান করতে আসেন। সোমনাথবাবু বলেন ‘‘বরাহনগর থেকে বীজপুর পর্যন্ত আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা ঘুরে সঙ্গীত ও সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষগুলির তালিকা তৈরি করেন। প্রতি বছরই নতুন করে এই তালিকা তৈরি হয়। যাতে নতুনরা সুযোগ পান।’’ শুধু ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলই নয় বাংলাদেশ, ত্রিপুরা, মুম্বই, চেন্নাইয়ের শিল্পীরাও শ্যামনগর উৎসবে গানের অনুষ্ঠানে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কখনও অলকা ইয়াগনিক তো কখনও ঊষা উত্থুপ। ২৩-২৯ জানুয়ারি সারাদিন শুধু গান আর নাচ। কাজ ফেলে সারাদিন এখানেই থাকেন তাঁরা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা, ঘড়ি ধরে ১২ ঘণ্টার অনুষ্ঠান। মাঠজুড়ে সাউন্ড সিস্টেম। গমগম করে গোটা এলাকা।
মঞ্চকে ঘিরে বসে মেলা। জিলিপি, তেলেভাজা, ঘুগনি নানা দোকান। বিক্রিবাট্টাও মন্দ হয় না। ঘুগনি বিক্রেতা রিনা পাল বলেন, ‘‘প্রতিদিন পাঁচ কেজি মটরের ঘুগনি বানাই। রাতের মধ্যেই শেষ। খালি পেটে কি আর গান শোনা হয়?’’ সব মিলিয়ে জমে উঠেছে এই উৎসব।