এই সেই বার্তা। নিজস্ব চিত্র
ভোর সাড়ে ৬ টায় হোয়াটসঅ্যাপের শব্দে ঘুমটা সামান্য পাতলা হয়ে এসেছিল মেহেদি হাসান মোল্লার। মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে নিমেষে উবে গেল ঘুম। মেসেজে লেখা, ‘‘হাই, ইট’স ইওর মোমো!’’
ক’দিন ধরে সংবাদমাধ্যমে মোমো নিয়ে প্রচুর খবর। সেই মোমোর মেসেজ সটান তাঁর মোবাইলে, দেখে বিশ্বাস হচ্ছিল না মেহেদির। ভেবেছিলেন, বন্ধুরা কেউ ঠাট্টা করছেন। গোসাবার ওই যুবক ডাক্তারি পড়েন কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে। মেহেদি পাল্টা লেখেন, ‘‘হু ইজ দিস?’’ উত্তর মেলে, ‘‘আই অ্যাম ইওর ফ্রেন্ড।’’ মেহেদি জানতে চান, কোথা থেকে মেসেজ লেখা হচ্ছে? তাতে ইংরেজিতে উত্তর আসে, ‘ফ্রম মুন!’
এর পরেও বেশ কিছুক্ষণ চলতে থাকে মেসেজ আদান-প্রদান। এক সময়ে তাঁকে গেম খেলতে বলা হয়। মেহেদি ট্রু কলারে হোয়াটস অ্যাপ নম্বরটি খুঁজে দেখেন, সেটি নিউ ইয়র্কের নম্বর। এর পরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যুবক। নম্বরটি ব্লক করে দেন। সন্ধ্যায় কল্যাণী থানায় গিয়ে অভিযোগও দায়ের করেন।
মেহেদি জানান, ওই নম্বর থেকে কে বা কারা বার-বার মেসেজ করে খেলা শুরু করার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকে। মেহেদি জানতে চান, কী ভাবে তিনি খেলা শুরু করবেন। তখন বলা হয়, ‘আমার জন্য একটা গান করুন। সেটা রেকর্ড করে পাঠান। এটা হল খেলার প্রথম পর্যায়। অনলাইন এই গেমের আরও অনেক পর্যায় রয়েছে। পরে তা জানানো হবে।’ মেহেদি জানান, তিনি গান করতে পারেন না। এর পর আর দেরি না করে তিনি এক দাদাকে ফোন করেন। সেই দাদা তিনি নম্বরটি ব্লক করার পরামর্শ দেন। সেটাই করেন ওই ডাক্তারি পড়ুয়া। কিন্তু এতটাই ভয় পেয়ে যান যে আর ক্লাসে যেতে পারেননি।
বুধবার কৃষ্ণনগরের কিশোরের মোবাইলেও হোয়াটস অ্যাপে মোমো গেমের লিঙ্ক আসে। সেটা দেখার পর সদ্য হোটেল ম্যানেজমেন্টে ভর্তি হওয়া ওই কিশোর ভয় পেয়ে যায়। নম্বর ব্লক করে সে রাতে কোতোয়ালি থানায় এসে লিখিত অভিযোগ জানায়। এ দিকে আসাননগরের মোমো-কাণ্ডে বাজেয়াপ্ত চারটে মোবাইল পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তার কোনও সূত্র খুঁজে পায়নি পুলিশ।