সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। ছবি সংগৃহীত।
সম্প্রতি জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। শুক্রবার এই প্রথম এলেন সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে। বৈঠকে সাংসদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আরাবুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎমণ্ডল, স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ মণ্ডল, মৎস্য ও প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ মোমিনুল ইসলাম, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হিরণ্ময় বসু।
হাসপাতালের পানীয় জল-সহ বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন সাংসদ। আগে ওই হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব যে পরিমাণে হত, বর্তমানে তার থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে জানতে পারেন তিনি। অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়েও খোঁজ-খবর করেন। ইসিজি মেশিন-সহ অন্যান্য মেশিন কী অবস্থায় আছে, জানতে চান। পরে ফার্মেসি, শয্যা, ক্যান্টিন ঘুরে দেখেন।
একটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন, বেড়া দিয়ে পুরুষ ও মহিলার শয্যা আলাদা করে রাখা হয়েছে।
এক স্বাস্থ্যকর্মী সাংসদকে জানান, মহিলা রোগীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে রাতে কোনও পুরুষ রোগীকে ভর্তিই রাখা হয় না। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, প্রায় তিন বছর ধরে বিভিন্ন সংস্কারের কাজ হচ্ছে। পুরুষ, মহিলা আলাদা ওয়ার্ড তৈরি না হওয়ায় একই ওয়ার্ডের মধ্যে আলাদা ভাবে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।
ক্যান্টিন পরিদর্শনে গিয়ে চাল, ডাল, সব্জি পরীক্ষা করেন মিমি। রোগী পিছু তিন বেলা খাবারের জন্য বরাদ্দ ৪৬ টাকা। এই সামান্য টাকায় কী ভাবে রোগীদের সুষম খাবার দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। হাসপাতাল চত্বরে আবর্জনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আরাবুলদের নির্দেশ দেন, অবিলম্বে সাফাই করতে হবে। দু’একদিনের মধ্যে হাসপাতাল পরিষ্কার করে সেই ছবি তুলে তাঁকে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। হাসপাতালে ঢোকার প্রধান রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংসদ।
এ দিন হাসপাতালের ১০ জন যক্ষা রোগীকে ‘দত্তক’ নিয়েছেন মিমি। আরও ২৫ জন রোগী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপস্থিত আধিকারিকদের। হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা কী ভাবে দ্রুত সমাধান করা যায়, তা দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন সাংসদ।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্লক হাসপাতাল থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। এমনিতেই জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালের রোগীদের বিশেষ প্রয়োজনে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। তা ছাড়া, ভাঙড় ২ ব্লকের এমন কিছু গ্রাম আছে, যেখান থেকে প্রসূতি মায়েদের ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসার পরিবর্তে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সহজ। সে কারণে রোগীর পরিবার ও অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা সরাসরি প্রসূতি মায়েদের সেখানেই নিয়ে চলে যান। এ সব কারণেই ব্লক হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার কমছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।