পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের গ্রামে বহিরাগত হামলার অভিযোগে মঙ্গলবার উত্তপ্ত হয়েছিল ভাঙড়ের খামারআইট ও নতুনহাট এলাকা। বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল আরাবুল ইসলাম বাহিনীর বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটকপুকুরে এক সভায় পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদেরই কার্যত হুমকি দিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ভাঙড়-১ ব্লক তৃণমূলের ডাকে আয়োজিত ওই সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাইলেই মাছিভাঙা-খামারআইটে ঢুকতে পারি। কিন্তু তা করি না। কারণ আমরা চাই না, আর একটা নন্দীগ্রাম হোক।’’ ওই জনসভায় ছিলেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের সর্দার, জেলা পরিষদ সদস্য কাইজার আহমেদ প্রমুখ।
শোভনবাবু আরও বলেন, ‘‘পাওয়ার গ্রিড হলে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ উপকৃত হতেন। কিন্তু ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে আজ যারা মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, তারাই নকশালপন্থীদের সঙ্গে মিলে এর বিরোধিতা করছেন।’’
পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সিপিএমের প্রায় ৫০০ জন এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মেয়র। যদিও সিপিএমের দাবি, তাঁদের কেউ তৃণমূলে যোগ দেননি।
ভাঙড়ে নিরীহ মানুষের উপর লাগাতার আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিন বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস এবং বাম বিধায়কেরা। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে রাজ্যের সুস্পষ্ট নীতি না থাকায় কৃষক এবং কৃষির উপরে নির্ভরশীল স্থানীয় মানুষ ভীত ও সন্ত্রস্ত হচ্ছেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেটি পড়ার অনুমতি দিলেও তা নিয়ে আলোচনা করতে দেননি। প্রতিবাদে কংগ্রেস এবং বাম বিধায়কেরা ওয়াক আউট করেন। অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে কংগ্রেস অবশ্য সভায় যোগ দেয়।
কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র জানান, মঙ্গলবারও ভাঙড়ে সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভাঙড়ে যা হচ্ছে, তাতে মানুষের ক্ষোভ এর পরে যেখানে পৌঁছবে, সরকারকেই তার মোকাবিলা করতে হবে। গরিব সংখ্যালঘু মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার এবং তৃণমূল। এর প্রতিবাদ হবেই।’’