মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়া ইলিশ। — ফাইল চিত্র।
গত কয়েক বছর কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীদের জালে তেমন একটা পড়েনি। ফলে আক্ষেপ ছিল তাঁদের। এ বার ছবিটা ভিন্ন। বর্যায় মাছ ধরার মরসুমে জালে পড়ছে ইলিশের ঝাঁক। হাসি ফিরেছে মৎস্যজীবীদের মুখে।
গত দু’দিন ধরে কাকদ্বীপমহকুমা এলাকায় মাছের বাজারে ইলিশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। গত দু’দিন প্রায় ৬০০ টনেরকাছাকাছি ইলিশ কাকদ্বীপে এসেছে। এখনও বেশ কিছু ট্রলার ফেরেনি। ফলে বাজারে ইলিশের জোগান আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবীরা।
মৎস্যজীবীদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূবালি বাতাস এবং ঝিরঝিরে বৃষ্টির ফলে জালে উঠছে বিপুল পরিমাণ ইলিশ। বর্ষার সময়ের এই ইলিশের স্বাদ ভাল,জানাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। ইতিমধ্যেই সেই ইলিশ পৌঁছে গিয়েছে নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ ও সাগরের মৎস্য বন্দরগুলিতে। এর পরে, ইলিশ যাবে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মাছের আড়তে। সেখানে নিলামের পরে পৌঁছবে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে।
মৎস্যজীবীদের সংগঠনের দাবি, সমুদ্র থেকে আসা ইলিশগুলির ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি। মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে ৪০০-৫০০ গ্রাম ইলিশের কেজি প্রতি দাম ছিল ৬০০-৮৫০ টাকা। এ ছাড়া, ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ কেজি প্রতি প্রায় ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আবার, ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ছিল কেজি প্রতি ১৩০০ টাকা।
কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, এবং সাগরের প্রায় আড়াই হাজার ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। ইলিশের জোগান বেশি হওয়ায় খোলা বাজারে মাছের দর কিছুটা বাড়তে পারে। তবে দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকবে বলে আশা ব্যবসায়ী মহলের।
কাকদ্বীপের অক্ষয়নগরের বাসিন্দা মেঘনাদ দাসের মাছ ধরার ট্রলার আছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার ১২টি ট্রলার আছে। গত কয়েক বছরে তেমন লাভ হয়নি। এ বছর মাছের জোগান ভাল থাকায় আশা করছি লাভ ভালই হবে।’’
মৎস্যজীবী সুজয় দাস বলেন, ‘‘এ বছর টন-টন ইলিশ পড়ছে জালে। তাই আমাদের কাজও বাড়ছে। গত দু-তিন বছর ভাল পরিমাণে ইলিশ না মেলায় অনেককে বাইরে কাজে যেতে হয়েছিল।’’
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘গত দু’দিনে প্রায় ৬০০ টনের মতো ইলিশ কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় ঢুকেছে। আরও ট্রলার মাছ নিয়ে ধীরে ধীরে ঢুকবে। এক একটি ট্রলার কম-বেশি আড়াই থেকে তিন টন মাছ নিয়ে ফিরছে।’’