ছবি: সংগৃহীত।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ ক্রমবর্ধমান অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায়। নিয়মিত ভাবে মানুষ এখানে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ এখনও সকলে সচেতন নন।
শহরের সচেতন বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, উপসর্গ থাকা সত্বেও কিছু মানুষ লালারস পরীক্ষা করাচ্ছেন না। উপসর্গ গোপন করে যাচ্ছেন। ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন বা স্থানীয় চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন। উপসর্গ নিয়ে পথেঘাটে ঘোরাঘুরি করছেন বলেও অভিযোগ। এর ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। উপসর্গ নিয়ে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি, এমন ঘটনাও ঘটেছে, কেউ করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস দিয়ে এসে রিপোর্ট আসার আগেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন। অনেকের সংস্পর্শে আসছেন তাঁরা। পরে রিপোর্ট এলে জানা যাচ্ছে, তাঁরা করোনা পজ়িটিভ। কিন্তু ততক্ষণে বহু মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন তাঁরা। ছড়িয়েছে সংক্রমণ।
অভিযোগ, সেফহোম এখনও চালু না হওয়ায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। কারণ, কোনও পরিবারের এক সদস্য আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকছেন। কিন্তু অনেকেরই বাড়িতে আলাদা হোম আইসোলেশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে বাকি সদস্যেরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। সম্প্রতি একটি পরিবারে এক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাড়িতেই ছিলেন। সেই পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য পরে আক্রান্ত হয়েছেন। মানুষের মধ্যে উপসর্গ চেপে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ার পিছনে রয়েছে আতঙ্ক। অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘করোনা পজ়িটিভ হলে একঘরে হওয়ার আশঙ্কায় মানুষ নিজেকে সুস্থ প্রমাণের চেষ্টা করছেন। করোনা পজ়িটিভ হলে মানুষ তাঁদের বাঁকা চোখে দেখছেন, এই ভয় মানুষের মধ্যে কাজ করছে।’’
বাসিন্দারা জানালেন, এমন ঘটনা ঘটছে, লালারস পরীক্ষার সময়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল ফোন নম্বর দিচ্ছেন। যাতে পরীক্ষায় পজ়িটিভ হলে তাঁকে খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। তা ছাড়া, বাজারে, ব্যাঙ্কের সামনে, দোকানে শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা হচ্ছে না। অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘আমরাও খবর পাচ্ছি, অনেকে উপসর্গ নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। এর ফলে সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। ভয়, সামাজিক চাপের আশঙ্কা থেকে মানুষ এমনটা করছেন। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে লাগাতার। পুরসভা নাগরিকদের পাশে সব সময়ে রয়েছে।’’ সোমবারের মধ্যে ১৫ শয্যার একটি সেফহোম চালু করা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালটিকে শীঘ্রই কোভিড হাসপাতালে হিসাবে চালু করা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধ ও বৃহস্পতিবার এই দু’দিনে এখানে নতুন করে ৫০ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত শহরে ৩৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ২১৬ জন। মারা গিয়েছেন ৪ জন।’’
ডিওয়াইএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে করোনার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ৮২ জনের রক্ত নেওয়া হয়েছিল। ৪ জন পজ়িটিভ হয়েছেন।