—প্রতীকী ছবি।
মিলছে আন্দোলনের সুফল, বিচার পাচ্ছেন সন্দেশখালির মানুষ।
জমি দখল, লিজ়ের টাকা না পাওয়ার মতো নানা অভিযোগ ছিল সন্দেশখালির মানুষের। শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দারদের মতো তৃণমূল নেতারা একের পর এক গ্রেফতার হয়েছে আন্দোলনের জেরে। তারপর থেকে জমি-জমি নিয়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে এলাকায় একাধিক শিবির করেছে পুলিশ-প্রশাসন। সেখানে গত কয়েক মাসে হাজারখানেক অভিযোগ জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। অনেক ক্ষেত্রেই তার নিষ্পত্তি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট থানার বয়ারমারি ২ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বিশু মাহাতোর প্রায় ১৬ শতক জমি দখল করে নিয়েছিলেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী। সন্দেশখালির আন্দোলনের পরে বিশু সাহস করে অভিযোগ করেন পুলিশের কাছে। পুলিশ সম্প্রতি জমি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এখন লিজ়ের টাকাও পাচ্ছে পরিবারটি। বিশু বলেন, ‘‘সন্দেশখালি আন্দোলনের আগে বহু বার পুলিশকে জানিয়েছি, লাভ হয়নি। তবে এ বার পুলিশ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ করেছে।’’
ন্যাজাট থানার কানমারির বাসিন্দা রামকৃষ্ণ দাস কিছু দিন আগে থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর চাষের জমি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় কয়েক জন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সম্প্রতি রামকৃষ্ণের জমি তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
সরবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বীরাজ ঘোষ জানালেন, তাঁর ৮০ শতক জমি বেদখল হয়ে গিয়েছিল।সম্প্রতি সে সব ফিরে পেয়েছেন তিনি। বীরাজ বলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিন আমার পাকা বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল। গাছ কেটে নিয়েছিল। জমি সিরাজউদ্দিনের নামে রেকর্ড করে নেয়। আমাদের গ্রামছাড়া করেছিল। সন্দেশখালি আন্দোলনের পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। পুলিশ তৎপর হয়। এখন জমির রেকর্ড আবার আমার নামে হয়েছে। জমি ফিরে পেলাম।’’
মিনাখাঁর এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খাঁ বলেন, ‘‘ন্যাজাট থানা এলাকায় শতাধিক মানুষের জমি সমস্যার সমাধান করা গিয়েছে। আইনানুগ ভাবে আরও কিছু জমি-জট কাটানোর কাজ চলছে।’’ সন্দেশখালি ১ বিডিও সায়ন্তন সেনের কথায়, ‘‘জমি নিয়ে যা অভিযোগ এসেছে, বিভিন্ন সময়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর খতিয়ে দেখছে। কিছু সমাধান হয়েছে। আরও কাজ চলছে।’’ সন্দেশখালির বিধায়ক তৃণমূলের সুকুমার মাহাতোর কথায়, ‘‘আমরা চাই না, কারও জমি কেউ অবৈধ ভাবে দখল করুক।’’
সন্দেশখালির বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ-প্রশাসন বুঝেছে, আর জোর-জুলুম করা যাবে না। মানুষ খেপে উঠতে পারে।’’