নার্সারিতে দেখভাল হচ্ছে ম্যানগ্রোভ চারার। নিজস্ব চিত্র
ইয়াস বিপর্যয়ের জেরে সুন্দরবন এবং উপকূল জুড়ে ব্যাপক হারে ক্ষতি হয়েছিল ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের। সেই ক্ষত পূরণ করতে সুন্দরবন জুড়ে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগাতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বন দফতর। ইতিমধ্যেই ১৪টি নার্সারিতে ছ’টি প্রজাতির ম্যানগ্রোভ চারা তৈরি করে সবুজায়নের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপানের সময় সুন্দরবন-সহ জেলা জুড়ে ছোট এবং বড় মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি গাছ নষ্ট হয়েছিল। বিশেষ করে উপকূল এবং নদী লাগোয়া এলাকাতেই ক্ষতির পরিমাণ ছিল বেশি। সেই সময় ক্ষতিপূরণ করতে কয়েক কোটি গাছ লাগিয়েছিল বন দফতর। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ধেয়ে আসে ইয়াস এবং পূর্ণিমার কটাল। তার জেরে নষ্ট হয়ে যায় নতুন গাছগুলির একটি বড় অংশ। তবে সবুজের ঘাটতি মেটাতে জেলা প্রশাসন এবং বন দফতর যৌথভাবেই বৃক্ষরোপণের কাজ শুরু করে। মঙ্গলবার জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমপানের পর অনেক গাছ লাগানো হয়েছিল সুন্দরবনে। কিন্তু ইয়াসের জেরে সেই গাছগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এ বার প্রায় ৫ কোটি গাছ লাগানো হচ্ছে। গাছগুলির পরিচর্যাতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।’’
বন দফতর নিজ উদ্যোগে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগাতে চলেছে। সে জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে ১ হাজার ৯৪ হেক্টর খাস জমিও বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাদাবনের ৫৬৫ হেক্টর জমিতে গাঠ লাগানো হবে। বৃক্ষ রোপণ করা হবে বিভিন্ন নদীর পাড়েও। সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৯০২ হেক্টর জমিতে ম্যানগ্রোভ লাগানো হবে। এ জন্য জেলার ১৪টি নার্সারিতে দুই প্রজাতির বাইন, কাঁকড়া, ক্যাওড়া, খুলসি, গর্জন এবং গরান গাছের চারা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম থেকেই সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি, কুলতলি, বাসন্তী, গোসাবা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১১টি ব্লকে শুরু হবে বৃক্ষরোপণ। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মীদের নিয়োগ করে সেই মহাযজ্ঞের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। বন দফতর চায়, ডিসেম্বরের মধ্যেই ম্যানগ্রোভ বসানোর কাজ শেষ হোক।