পারিবারিক ঝামেলার জেরে রেল অবরোধ, নেতৃত্বে সাংসদ

দিন কয়েক আগে দেওর-বৌদির বিবাদটা শুরু হয়েছিল বাড়ির চৌহুদ্দিতে। কিন্তু তার জল যে রাস্তা পর্যন্ত গড়াবে, তা ভাবেনি কেউই। দেওরের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার গাইঘাটায় রেল অবরোধ করলেন বৌদি ও তাঁর লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

বিক্ষোভে সামিল মমতাবালা ঠাকুর। নিজস্ব চিত্র।

দিন কয়েক আগে দেওর-বৌদির বিবাদটা শুরু হয়েছিল বাড়ির চৌহুদ্দিতে। কিন্তু তার জল যে রাস্তা পর্যন্ত গড়াবে, তা ভাবেনি কেউই। দেওরের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার গাইঘাটায় রেল অবরোধ করলেন বৌদি ও তাঁর লোকজন।

Advertisement

গাইঘাটার ঠাকুরনগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়ির ঘটনা এই ঘটনায় তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর তাঁর দলবল নিয়ে গাইঘাটায় রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার রাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরোধের পরে রেল পুলিশ ও স্থানীয় পুলিশ এসে তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলে।

ঘটনার জেরে আরপিএফ মমতাবালা-সহ কয়েকজনের নামে মামলা রুজু করেছে। রেল পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে কারণে রেল অবরোধ করা হল, তার সঙ্গে রেলের কোনও বিষয় যুক্ত নয়। তাই মামলা করা হয়েছে।’’

Advertisement

কী ঘটেছিল মঙ্গলবার?

মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে একটি ঘর ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরবাড়ির বড় বৌ তথা বনগাঁর সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে বিবাদ বাধে ঠাকুরবাড়ির ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের। ২২ এপ্রিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলবাবু থানায় মমতাবালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

মঞ্জুলবাবু জানান, তাঁর বাবা প্রয়াত প্রমথরঞ্জন ঠাকুর ঠাকুরনগর পত্তনের সময়ে পরিবারের জন্য একটি বাস্তুগৃহ তৈরি করেছিলেন। যা মতুয়া ভক্তদের কাছে এখন স্মৃতি সৌধ। অভিযোগ, মমতাবালাদেবী তাঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে ওই বাস্তুগৃহটি ভেঙে দিচ্ছেন।

যদিও মমতাবালাদেবীর দাবি, ওই ঘরগুলি পুরনো হয়ে গিয়েছিল। কেউ থাকতে পারতেন না। তাই সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘ বৈঠক করে সেটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে কিছুই করিনি। ওখানে একটি গেট তৈরি করা হবে।’’

মঙ্গলবার রাতে সাংসদও থানায় মঞ্জুলকৃষ্ণ ও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেন। তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতেই ওই দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সাংসদ গাইঘাটায় রেল অবরোধ শুরু করেন।

যার জেরে আপ ও ডাউন লাইনে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গরমে যাত্রীরা কাহিল হয়ে পড়েন। এক যাত্রীর কথায়, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে আমাদের কেন ভুগতে হবে। অবিলম্বে রেল পুলিশের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’’ মমতাবালার উপরে হামলার ঘটনায় পুলিশ পরে একজনকে গ্রেফতার করেছে।

কিন্তু তৃণমূলের ঘোষিত নীতি হল, রেল বা সড়ক অবরোধ করা যাবে না। সেখানে দলের একজন সাংসদ হয়ে মমতাবালাদেবী কী করে রেল অবরোধ করলেন?

সাংসদের সাফাই, ‘‘আমি সাংসদ হিসাবে নয়, সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি হিসাবে রেল অবরোধ করেছি। মতুয়া ভক্তদের দাবি মতো আমাকে এই কাজ করতে হয়েছে। আমাকে এবং মহিলা ভক্তদেরও গতকাল মারধর করা হয়েছিল।’’

তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেছেন, ‘‘এটা ওঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তবে রেল অবরোধ করে উনি ঠিক করেননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement