Lok Sabha Election 2019

ভোট দিতে পারব তো? প্রশ্ন গ্রামে

লোকসভা ভোটে এই মহকুমার চারিদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দল ঘুরছে। তবু আতঙ্ক কাটছে না বাসিন্দাদের।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৯ ০১:২২
Share:

কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিতিতেও উদ্বিগ্ন স্থীনায় বাসিন্দারা। —ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গিয়ে তৃণমূলের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল। অভিযোগ, বিরোধীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাধা দেয়। চার দিন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু দিতে পারেননি। ব্লকের গেটের সামনে থেকেই মার খেয়ে ফিরতে হয়েছিল তাঁদের। এলাকাবাসী ভোট দিতে গেলে তাঁদের বলা হয়েছিল, ‘‘তোদের ভোট হয়ে গিয়েছে। বাড়ি চলে যা।’’

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার ১, ২ ও ফলতা ব্লকের ঘটনা। লোকসভা ভোটে এই মহকুমার চারিদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দল ঘুরছে। তবু আতঙ্ক কাটছে না বাসিন্দাদের। ফলতার হোগল গ্রামের বাসিন্দা করিম মোল্লা, সালাম মোল্লারা বলেন, ‘‘নিজের ভোটটা দিতে চাই। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় অনেকে। বুথ পর্যন্ত যেতে পারলেই হয়। বিরোধীদল হলে ‌আগেই আটকে দেবে।’’ ডায়মন্ড হারবারে কামারপোল গ্রামের বাসিন্দা শঙ্করী হালদার, তপতি মণ্ডলেরা জানান, পঞ্চায়েত ভোট দেওয়া হয়নি। এ বার পারবেন কিনা, সেটাই প্রশ্ন। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট মিটলেই ফিরে যাবে। সেই আতঙ্কও আছে। কিছু মানুষ অবশ্য আছেন, যাঁরা ভোট দিতে বদ্ধপরিকর। মনের জোর নিয়েই বলেন, ‘‘ভোট আমরা দেবই।’’

তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা ভাল নয় বলে জানান অনেকে। ডায়মন্ড হারবার মহকুমা প্রশাসন ভবনে প্রাক্তন কংগ্রেসের সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মনোরঞ্জন হালদার দলবল নিয়ে ভিতরে ঢুকতে গেলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। দলের নেতা সুজিত পাটোয়ারি বাঁচিয়েছিলেন তাঁকে। সে দিনের কথা বলতে গেলে বুক কাঁপে সুজিতের। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা না থাকলে, স্যারকে মেরেই ফেলত। শুধু তাই নয়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ব্লক অফিসের সামনে কাপড়ে মুখ ঢেকে একদল‌ দুষ্কৃতী লাঠি-রড, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করত।’’ কিন্তু এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের ভোট। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে জেলা পরিষদে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কোনও বাধার মুখে পড়তে হয়নি।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এলাকাবাসীর দাবি, ভোট একটা উৎসব। কিন্তু যোগ দিতে পারাটা বেশ চাপের হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে কেউ কিছু বলবে না। তবে ভোটের আগের দিন রাতে দুষ্কৃতীরা অস্ত্র নিয়ে দল বেঁধে বিরোধীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শাসানি দিয়ে আসবে। অভিযোগ, তারা রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেয়— ‘‘কাল যেন বুথের সামনে না দেখি।’’ শুধু তাই নয়, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। গ্রাম ছাড়াও করা হতে পারে, বলা হয়। এই অবস্থায় ভোট দেওয়া সত্যিই ভাবনার। ইতিমধ্যে তৃণমূলের শাসানি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। সিপিএমের প্রার্থী ফুয়াদ হালিমের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে ফলতায়।

সমস্ত অভিযোগই অবশ্য মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি শক্তি মণ্ডল। কোথাও কোথাও বিরোধীরা সংগঠন না থাকায় পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দিতে পারেনি বলে দাবি তাঁর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement