চতুর্মুখী লড়াই এ বার জয়নগরে

প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল এবং এসইউসি। শুক্রবার ঘোষণা হল বাম শরিক আরএসপির প্রার্থী। দু-একদিনের মধ্যে হয়তো সামনে চলে আসবে বিজেপি প্রার্থীর নামও।

Advertisement

সমীরণ দাস

জয়নগর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

প্রতিমা মণ্ডল

প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল এবং এসইউসি। শুক্রবার ঘোষণা হল বাম শরিক আরএসপির প্রার্থী। দু-একদিনের মধ্যে হয়তো সামনে চলে আসবে বিজেপি প্রার্থীর নামও। লোকসভা ভোটে চতুর্মুখী লড়াইয়ের জন্যই প্রস্তুত হচ্ছে জয়নগর।
তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ আটকাতে রাজ্যস্তরে জোট করে এগোতে চাইছে সিপিএম ও কংগ্রেস। জোটের পথে বেশ কয়েকটি আসন নিয়ে অবশ্য এখনও জটিলতা কাটেনি। তবে জয়নগর কেন্দ্রটির জন্য থাকছে আরএসপির প্রার্থী। গতবারের মতোই এখান থেকে আরএসপির কিসান শাখার রাজ্য সম্পাদক সুভাষ নস্করই দাঁড়াচ্ছেন। কেন্দ্রের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাল সংগঠন থাকলেও জোট হলে এখানে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস।
তবে তারপরেও এই কেন্দ্রে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোট এক বাক্সে আনা যাবে না বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কারণ ইতিমধ্যেই জয়নগরে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে এসইউসি। দাঁড়াচ্ছেন কুলতলির প্রাক্তন বিধায়ক জয়কৃষ্ণ হালদার। জয়নগর লোকসভাকেন্দ্রে একটা বড় অংশে ভাল সংগঠন রয়েছে এসইউসির। ২০০৯ সালে এখান থেকে এসইউসির প্রার্থী জয়ীও হন। সে বার অবশ্য তৃণমূলের সমর্থন ছিল তাঁদের সঙ্গে। এ বার একলা লড়লেও তৃণমূল বিরোধী ভোটের একটা বড় অংশ তাঁদের ঝুলিতেই যাবে বলে মনে করছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল।
আর এই ভোট ভাগই আটকাতে চাইছে আরএসপি। তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী ভোটকে এক বাক্সে আনার জন্য নিচুতলায় কোনওরকম সমঝোতা করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে এসইউসির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন সুভাষ নস্কর। তিনি বলেন, ‘‘দু’দলেরই মুখ্য উদ্দেশ্য বিজেপি ও তৃণমূলকে ঠেকানো। সার্বিক ভাবে জোটের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেটা হয়নি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চেষ্টা করছি এই কেন্দ্রে যদি দুই দলের ভোট এক জায়গায় আনা যায়। এসইউসি নেতৃত্বের কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাবও দিয়েছি।’’
এসইউসির রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এবং জয়নগরের প্রাক্তন বিধায়ক তরুণ নস্কর অবশ্য জানান এরকম কোনও প্রস্তাব তাঁরা পাননি। পেলেও এই ধরনের কোনও সমঝোতায় যে তাঁরা যাবেন না তাও স্পষ্ট করে দেন তরুণবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সর্বভারতীয় ভাবে বাম দলগুলিকে একসঙ্গে আন্দোলনে নামার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা নীতি বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু ভোটে জেতার জন্য কোনও রকম সমঝোতায় যাবে না এসইউসি। আর তা ছাড়া, লোকসভাটা তো নিচুতলার নির্বাচন নয় যে এখানে নিচুতলায় সমঝোতা হবে।’’
২০১৪ সালে এই কেন্দ্রে আলাদা আলাদা লড়েছিল আরএসপি ও এসইউসি। প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেসও। পরিসংখ্যান বলেছে, আরএসপি ও এসইউসির ভোট এক জায়গায় হলেই সে বার হেরে যেত তৃণমূল। তবে সেটা হয়নি।
এ বারও সেই সম্ভবনা কার্যত নেই। তার ওপর এ বার এই কেন্দ্রে অনেকটাই শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বাম ভোট ভাগ হওয়ায় এ বার এখানে লড়াইটা কার্যত তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যেই।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল অবশ্য কোনও বিরোধীকেই তেমন পাত্তা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নই আমাদের অস্ত্র। কোনও বিরোধী দলই এই কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারবে না। বিপুল ভোটে জিতবে তৃণমূল।’’ পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও। বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্বের জেলা সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, ‘‘জয়নগরে এ বার মানুষ তৃণমূলকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখান করে বিজেপিকে জেতাবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement