অববোধ: তখনও থামেনি উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা জুড়ে ডাঁই করে ফেলা হয়েছে ইমারতি সরঞ্জাম। মাঝে মধ্যে তা উঠে এসেছে রাস্তার উপরেও। সরু হয়ে গিয়েছে রাস্তা। এর জেরে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
শনিবার সকালে রায়দিঘির বোলেরবাজার-রায়দিঘি রোডে ট্রাকের ধাক্কায় জখম হন এক সাইকেল আরোহী। এরপরেই ওই রাস্তা থেকে ইমারতি দ্রব্য সরিয়ে নেওয়ার জন্য পথে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, ইমারতি দ্রব্যের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটছে। লরি কিংবা বড় গাড়ি এলে পথচারী, সাইকেল আরোহীরা যাওয়ার রাস্তা পাচ্ছেন না। তা ছাড়া, পাথরকুচির উপরে পড়ে বা বালিতে পিছলেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ দিন সকাল ৯টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ওই রোডের কুমোরপাড়া মোড়ে অবরোধ চলে। পরে পুলিশ ইমারতি দ্রব্য সরানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। দিন দু’য়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকুলতলা এলাকা থেকে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা ইমারতি দ্রব্য পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ উত্তরকুমার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের মধুসূদন মুন্ডা সাইকেলে রায়দিঘি বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রায়দিঘি কলেজ মোড়ের কাছে একটি বালি-বোঝাই ট্রাক পিছন দিয়ে ধাক্কা মারে তাঁকে। ডান পায়ে চোট লাগে। রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মধুসূদনের একটি পা বাদ দিতে হয়েছে।
এরপরেই কুমড়োপাড়ার কয়েক’শো মানুষ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, রায়দিঘি থেকে বোলেরবাজার প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়ে বোলেরবাজার থেকে সেতু পার হয়ে বহু মাল-বোঝাই ট্রাক পাথরপ্রতিমায় যায়। জনবহুল এলাকা হলেও গাড়ি বেশ জোরে চলে। তা ছাড়া, ওই রাস্তায় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ইমারতি সরঞ্জাম ইট, বালি ও পাথর ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বাসিন্দাদের দাবি, ইমারতি সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলতে হবে। বড় ট্রাক সকাল ৭টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত চলতে দেওয়া যাবে না। হাম্প তৈরি করতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা পাঁচু হালদার নিতাই হালদারের অভিযোগ, এই রাস্তায় গত কয়েক মাসে একাধিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত বা পুলিশের এ বিষয়ে নজরদারি নেই। রাস্তায় ইমারতি সরঞ্জাম ফেলে রাখা এবং বেপরোয়া ভাবে বড় বড় ট্রাকগুলি চলাচল করার জন্যই ঘটছে দুর্ঘটনা। অবিলম্বে সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিক পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তায় ইমারতি সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার জন্য সকাল থেকে মাইকে করে প্রচার হচ্ছে। পাশাপাশি ইমারতি সরঞ্জাম বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।