ফাইল চিত্র
দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ স্কুলের মিড ডে মিল। গরমের ছুটির আগে তিন মাস বন্ধ ছিল। ছুটির পরে প্রায় তিন সপ্তাহের মতো স্কুল শুরু হলেও মিড মিল চালু হয়নি বাসন্তীর ভাঙনখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মিড ডে মিলের টাকা-সহ স্কুলের উন্নয়ন খাতের টাকা প্রধান শিক্ষক লোপাট করছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। শুক্রবার এরই প্রতিবাদে স্কুলের সামনে বাসন্তী হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। ঘটনার জেরে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ হয়ে পরে যান চলাচল। খবর পেয়ে বাসন্তী থানার পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তোলেন।
অভিযোগ, জানুয়ারি থেকে মার্চ— টানা তিনমাস স্কুলে মিড ডে মিলের খাবার দেওয়া হয়নি পড়ুয়াদের। শুধু তাই নয়, গরমের ছুটির পরে স্কুল খুললেও চালু হয়নি মিল। স্কুলের উন্নয়ন খাতে টাকা এলেও দীর্ঘদিন কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম সর্দার দিনের পর দিন স্কুলে আসেন না বলেও অভিযোগ অভিভাবকদের। সহশিক্ষকেরা স্কুলে এলেও নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে আসেন বলে অভিযোগ। পঠনপাঠন ঠিকঠাক হচ্ছে না বলে জানান অভিভাবক, পড়ুয়ারা।
অভিভাবক শাহারুল শেখ, জাকির সর্দাররা বলেন, “প্রধান শিক্ষক দিনের পর দিন স্কুলে আসেন না। অন্যান্য শিক্ষকরা ও সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না। ফলে পড়ুয়ারা এসে দীর্ঘক্ষণ স্কুলের দরজা বন্ধ থাকায় ক্লাসরুমেই ঢুকতে পারে না। দিনের পর দিন মিড ডে মিল দেওয়া হয় না। হেডস্যার মিড ডে মিলের টাকা তছরুপ করছেন।”
এ দিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক। মিড ডে মিল বন্ধ থাকার কথা মেনে নিলেও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। এই বেনিয়মের জন্য স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা ফকির শেখের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জহিরুল। তিনি বলেন, ‘‘গরমের ছুটির আগে প্রায় তিনমাস এবং স্কুল খোলার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে মিড ডে মিল। স্কুলের মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে টাকা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা রান্না করছেন না। এ বিষয়ে আমি বিডিওকে জানিয়েছি। আসলে এলাকার এক দুষ্কৃতী তথা যুব তৃণমূল নেতা ফকির শেখ স্কুলের কাজকর্মে বাধা দিচ্ছেন। আমার উপরে অত্যাচার করছেন। স্কুল ফান্ডের সমস্ত টাকা তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে বলে দাবি করছেন। আমি অস্বীকার করায় আমাকে বেশ কয়েকবার হেনস্থা ও মারধর করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’ প্রধান শিক্ষকের দাবি, নিরাপত্তাজনিত কারণেই তিনি নিয়মিত স্কুলে আসতে পারেন না।
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ অস্বীকার করে ফকির বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক নিজে দুর্নীতিগ্রস্ত। এর আগে একাধিক স্কুল থেকে দুর্নীতির অভিযোগে ওঁকে সরানো হয়েছে। এই স্কুলে এসেও একের পর এক দুর্নীতি করছেন। নিজের দুর্নীতি ঢাকতে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে দেখুক।”
বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা বলেন, “ওই স্কুলে কিছু সমস্যা চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য লোক পাঠানো হয়েছে।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।