রোপণ: নৈহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
গাছ লাগাচ্ছিলেন কাকুরা। তা দেখে গাছ লাগাতে ইচ্ছা করল চটকল শ্রমিকদের পরিবারের খুদেদের। এই খুদেরাই বাড়ির লোকেদের কাছে রীতিমতো বায়না করে গাছের চারা হাতে রবিবার নেমে পড়েছিল গাছ লাগাতে।
নৈহাটির হুকুমচাঁদ জুটমিলের জমিতে মেহগনি আর আকাশমণির চারা লাগাতে সারা দুপুর কাটল দ্বিতীয় শ্রেণির ঈশানী বন্দ্যোপাধ্যায়, সাক্ষী চতুর্বেদী, বর্ষা ত্রিবেদী, আয়ুষী দত্তদের। সঙ্গে ছিলেন ওই চটকলের সিইও সমীরকুমার চন্দ্র ও অন্য আধিকারিকেরাও।
কিছুদিন আগেই ঘটা করে পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশবিদরা বলছেন লাগামছাড়া গাছ কাটা ও নষ্ট করার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই একটি মোটরবাইক রাইডিং ক্লাবের সদস্যরা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কুলি লাইন ও চটকলের আশপাশের ঘিঞ্জি এলাকাগুলিতে গাছ লাগাচ্ছিলেন। তা দেখেই চটকল কর্মীদের পরিবারের খুদেরা এগিয়ে আসে। আয়ুষী জানায়, মোটরবাইকের দু’পাশে ব্যাগে গাছ ঝুলিয়ে নিয়ে আসা কাকুরা আমাদের বাড়ির কাছে জঞ্জাল ফেলার জায়গার চারপাশে গাছ লাগাচ্ছে। ওই গাছগুলি লাগানোর পর থেকে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার কথায়, ‘‘খারাপ গন্ধ’র জন্য আর জানালা বন্ধ করে রাখতে হয় না। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে গাছ লাগাবো ঠিক করলাম।’’
ঈশানী, বর্ষা সকলের পরিবারের লোকজন চটকলের কর্মী। তাদের এই গাছ লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে উৎসাহ দিয়েছেন হুকুমচাঁদ চটকলের সিইও তথা জুট বোর্ডের সদস্য সমীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ছোটদের মধ্যে এই সচেতনতা আসাটাই অনেক বড় ব্যাপার। আমাদের চটকলে অনেক গাছ আমি নিজেও লাগিয়েছি। ওদের দেখে অন্য শিশুরাও এগিয়ে আসবে গাছ লাগাতে।’’ কচিকাঁচাদের গাছ লাগানোর উৎসাহের কথা জানতে পেরে ব্যারাকপুরের ওই মোটরবাইক রাইডিং ক্লাবের সদস্যরাও এগিয়ে এসেছেন। তাঁরাই বেশ কিছু মেহগনি ও আকাশমণি গাছের চারা দিয়েছেন খুদে পরিবেশপ্রেমীদের। ওই রাইডিং ক্লাবের পক্ষে তরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কন্যা সন্তান জন্মালে ১১টি গাছ লাগানোর কর্মসূচী আমাদের। রাজ্য সরকার স্বীকৃত এই উদ্যোগ। কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় ফাঁকা জায়গা পেলেই আমরা প্রায় প্রতিদিন গাছ লাগাই পথের ধারে।’’
তবে ছোটদের মধ্যে গাছ লাগানোর এমন প্রবণতা তাঁদের উৎসাহ বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।