ভাঙল-জেটি: সোমবার ছবিটি তুলেছেন শান্তশ্রী মজুমদার
মাত্র তিন বছর আগেই কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল জেটি। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে তাও ভেঙে পড়ল।
কাকদ্বীপ-সাগর যাতায়াতের মূল মাধ্যম হল লট ৮ ফেরিঘাটের ওই ৪ নম্বর জেটি। কিন্তু তা ভেঙে পড়ায় চিন্তায় সাধারণ মানুষ। মেরামতির কাজ শুরু হলেও তা আদৌ কবে ঠিক হবে, জানেন না কেউই। কোটালে বাঁধ ভাঙা এবং ধস নামার ঘটনাও ঘটেছে মহকুমায়। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির জন্য কোনও মেরামতির কাজই এগোচ্ছে না বলে দাবি প্রশাসনের।
সেচ দফতরের তরফে তিন বছর আগেই জেটির গ্যাংওয়ে তৈরি করা হয়েছিল। অমাবস্যার কোটালে জলস্ফীতি ছিলই। তার সঙ্গে হাওয়ার দাপটে এ দিন দুপুরে মুড়িগঙ্গার উত্তাল ঢেউয়ে দুলে ওঠে জেটিটি। তাতে কংক্রিটের জেটির সঙ্গে লেগে থাকা গ্যাংওয়ের বোল্ট উপড়ে যায়। পন্টুনের উপর থাকা লোহার জঙ ধরা থামে গ্যাংওয়ের চেন বাঁধা ছিল। সেই থামও উপড়ে যায়। স্থানীয় কর্মীরা জানান, সে সময় জেটি বা গ্যাংওয়েতে লোক ছিল না। তাহলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, কী ভাবে এটা ঘটল।’’
সেচ দফতরের কর্তারা খারাপ আবহাওয়াকে দুষলেও দফতরের একটি অংশের ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, একমাত্র ঘুর্ণিঝড় হলে এরকম হতে পারে। জেটির সঙ্গে গ্যাংওয়ে জোড়া দেওয়ার ডিজাইন ত্রুটিও থাকতে পারে, পন্টুনের জঙ ধরা থামও আলগা হয়ে বিপত্তি ঘটতে পারে। তবে একবার উপড়ে আসা ওই জেটি নতুন করে নির্মাণ না করে মেরামত করলে ফের বড় বিপর্যয় হতে পারে বলে তাঁরা জানান।
লট ৮ ঘাটে এক নম্বর জেটিতে জোয়ারের সময় পর্যাপ্ত জল না থাকলে ফেরি পরিষেবা সম্ভব নয়। নামখানা থেকে চেমাগুড়ি লঞ্চ পরিষেবা এখন অনিয়মিত। ঝড়বৃষ্টির কারণে খুব অল্প সময় চলছে লঞ্চ। এই দু’টি পথই ৪ নম্বর জেটির বিকল্প পথ। কিন্তু এমন অবস্থা থাকলে যাতায়াতে অসুবিধা হয়ে যাবে।
দু’দিনের টানা বৃষ্টি ও কোটালের দাপটে সোমবার সাগরের সাগরের বেগুয়াখালিতে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ ভেঙে জল ঢোকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০টি পরিবার। জোয়ার-ভাটার দাপটে এখানে বাঁধে কোনও মেরামতির কাজই টিকছে না বলে প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এদিন ঘোড়ামারা দ্বীপেরও খেয়াঘাটের কাছে বড় ধস নামে। বিপত্তিতে পড়েন মানুষ। পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরের ক্ষেত্রমোহনপুর বাজারের কাছে ধস নামে। প্রায় ৩০ মিটার রাস্তা ধসে পড়ে। ব্রজবল্লভপুর, ক্ষেত্রমোহনপুর, গোবিন্দপুর-সহ ছোট রাক্ষসখালির বাসিন্দারা ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। এখন কাঠের পাটাতন পেতে কোনওরকমে যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে বাসিন্দারা জানান।