নোট বাতিলের কোপে ঘায়েল ‘অগ্নিগর্ভ বাংলার রংবাজ বৌমা’ কিংবা ‘ভাইয়ের রক্তে ভাইফোঁটা’। কোথাও বাতিল হচ্ছে বুকিং, কোথাও কম টাকাতেই শো হচ্ছে। যাত্রার অভিনেতা থেকে দর্শক, এজেন্ট থেকে মালিক— বিপদে পড়েছে সবাই।
কাকদ্বীপের জগৎজয়ী অপেরার অভিনেতা ও মালিক জিৎ কুমার (প্রভঞ্জন নস্কর) জানান, বছর কয়েক ধরেই যাত্রাপালার বাজার খারাপ। তার মধ্যে নোট বাতিলের পরে তাদের অনেকগুলি শো বাতিল করতে হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘বায়না নেওয়ার পরেও আমাদের প্রায় ২৩টি শো বাতিল করতে হয়েছে। কেউ কেউ কম টাকায় শো করতে বলছেন।’’
কাকদ্বীপ মহকুমায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৭টি অপেরা কোম্পানি রয়েছে। তাদের সবগুলিরই কম বেশি একই অবস্থা বলে জানাচ্ছেন অপেরাগুলির এজেন্টরা। তাঁদের আক্ষেপ, নগদ টাকা না থাকায় মেদিনীপুর এবং কলকাতা থেকে ‘কল শো’ আসছে না। গোটা কাকদ্বীপ মহকুমায় প্রায় ৩৫ জন যাত্রার বুকিং এজেন্ট রয়েছেন। তাঁদের অন্যতম কামারহাটের বিশু মল্লিক জানান, দুর্গাপুজোর পর থেকে শুরু করে দোল পূর্ণিমা পর্যন্ত যাত্রার মরসুম থাকে। নির্দিষ্ট দিনের দু’তিন মাস আগেই সেগুলি বুকিং হয়ে যায়। চিৎপুর, কাকদ্বীপ, মেদিনীপুর সব জায়গা থেকেই এখানে পালা আসে। তাঁর দাবি, নোট বাতিলের পরে যাত্রা শিল্পে প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। মিলছে না কমিশন।
পাথরপ্রতিমার অন্যতম অপেরা নাট্যভারতীর মালিক বাবলু দাস জানান, মেকআপ শিল্পী, কনসার্ট শিল্পীদের সংখ্যা কমিয়ে শো করতে হয়েছে। ‘আমার লক্ষ্ণী ফিরিয়ে দাও’ এর মতো কয়েকটি যাত্রার আলোকসজ্জা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নোট বাতিলের পরে গ্রাম বাংলায় যাত্রার আয়োজনও কমে গিয়েছে। কাকদ্বীপের উকিলের বাজার এলাকার স্থানীয় এক ক্লাবের সদস্য পাঁচুগোপাল মণ্ডল বলেন, ‘‘বিন্দুবাসিনী পুজো উপলক্ষে আমাদের গ্রামে যাত্রা হয়। কিন্তু এবার করা যায়নি। কারণ নগদ টাকা নেই।’’