আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন আইএসএফ নেতা ওহিদুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
এক সপ্তাহ আগেই ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকাত মোল্লা ভাঙড়ে এসে বিরোধীদের ‘জিনা হারাম’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এ বার সওকাত মোল্লা-সহ তৃণমূল নেতৃত্বকে পাল্টা একই হুঁশিয়ারি দিলেন আইএসএফের ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ওহিদুল ইসলাম।
রবিবার ছিল আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। এ জন্য ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজারে মেলার মাঠে এক জনসভার আয়োজন করেছিল তারা। ওহিদুল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসমা বিবি প্রমুখ।
ওহিদুল বলেন, ‘‘একজন ক্যানিং থেকে ভাঙড়ে এসে মস্তানি করে যাচ্ছে। সওকাত মোল্লা তুমি তৈরি থাকো। যদি একবার আমাদের ছেলেদের বলি, তা হলে তোমাদের জিনা হারাম করে ছেড়ে দেবে। কিন্তু আমাদের নেতা নওসাদ সিদ্দিকী সৌজন্যের রাজনীতি শিখিয়েছেন।’’
এক সপ্তাহ আগে ভাঙড় থানার বড়ালী সবুজ সঙ্ঘের মাঠে ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির ৯টি অঞ্চলের কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন ডেকেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্ব। সেখানেই সওকাত বিরোধীদেরও চড়া সুরে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘‘প্রশাসন যদি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করে, তা হলে এলাকার জনগণ তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। বোদরা এলাকায় তাদের জিনা হারাম করে দেওয়া হবে!’’ রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, তৃণমূল বিধায়কের হুঁশিয়ারি ছিল মূলত আইএসএফ-কে ইঙ্গিত করেই।
এ দিন ওহিদুলের পাল্টা একই হুঁশিয়ারিকে সওকাত গুরুত্ব দেননি। তিনি বলেন, ‘‘পাগল-ছাগল কী বলে, তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। ভাঙড়ের মানুষ শেষ কথা বলবেন। রাজনৈতিক ভাবে ওদের সঙ্গে লড়াই হবে।’’
গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে বারবার রক্ত ঝরেছে ভাঙড়ে। প্রাণহানিও হয়েছে। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে ওহিদুল বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে শাসকদল ভাঙড়ে রাশিয়া-ইউক্রেনের মতো যুদ্ধ বাধিয়েছিল। নওসাদ সিদ্দিকী ভাঙড় কাঁপিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি দিল্লি কাঁপানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই ওদের ভয় লাগছে। আগামী দিন ওদের ঠিকানা হবে তিহাড় জেল। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করব, ভাঙড় থেকে কয়েকজন নেতাকে জেলে ভরে দিলে এলাকা পুরো শান্ত হয়ে যাবে।"
আইএসএফের রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০২১ সাল প্রমাণ করেছে ভাঙড় আজ যা ভাবে, বাংলা সেটা কাল ভাববে। আগামী দিনে আমরা ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দেব।’’
গত বছর আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন উত্তাল হয়ে উঠেছিল ভাঙড়ের হাতিশালা এলাকা। এ দিন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সকাল থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর কড়া নজরদারি ছিল। তারপরেও ভাঙড়ের শানপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধানের নেতৃত্বে কচুয়া এলাকায় আইএসএফ কর্মী আনসারুল মোল্লাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার করে শানপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান মিরাজুল ইসলামের দাবি, "ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওদের পাশে কোনও মানুষ নেই। ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।"