সাদিকুল মোল্লা (ডান দিকে)। নওশাদ সিদ্দিকি (বাঁ দিকে) —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে তাঁর জয়ের শংসাপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে থানায় গিয়েছিলেন। অভিযোগ জানানোর এক দিনের মধ্যে সাদিকুল মোল্লা নামে সেই নির্দল প্রার্থী যোগ দিলেন তৃণমূলে। ভাঙড়ের চালতাবেড়িয়া অঞ্চলের বামুনিয়া গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথ থেকে জয়ী হন নির্দল প্রার্থী সাদিকুল। তিনি স্বীকার করে নেন যে, তাঁর জয়ের পিছনে আইএসএফের অবদান আছে। ভোটে তাঁকে সমর্থন করেছে নওশাদের দল। কিন্তু তা-ও তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সাদিকুলের কথায়, ‘‘এদের (তৃণমূল) নীতি-আদর্শ অনেক ভাল। তাই এই দলে যোগ দিলাম।’’
আইএসএফের সমর্থনে জয়ী হওয়া সাদিকুল শনিবার সকালে কাশীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ তাঁর ভোটে জয়ের সার্টিফিকেট (শংসাপত্র) দিচ্ছেন না। পরে তিনি বলেন, ‘‘এলাকার দুই আইএসএফ নেতা, গিয়াসুদ্দিন মোল্লা এবং মোকারেব মোল্লা আমাকে নিয়ে ফুরফুরায় গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে ভোটে জয়ের সার্টিফিকেট ছিল। নওশাদ সিদ্দিকি সার্টিফিকেট দেখার নাম করে আমার থেকে সেটি নেন। তার পর আর ফেরত দেননি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই রাজনীতি ভাঙড়ের মানুষ মেনে নেবে না। এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাচ্ছে সবাই। পুলিশ প্রশাসনকে সঠিক বিচার করার জন্য অনুরোধ করছি।’’ যদিও তাঁর ওই অভিযোগ হেসে উড়িয়ে দেন নওশাদ।
রবিবার সেই সাদিকুলই ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা এবং ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন। যোগদানের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাদিকুল বলেন, ‘‘আমি অনেক আগে থেকে কংগ্রেস করতাম। পরে তৃণমূল করেছি। কিন্তু গোষ্ঠীকোন্দলের জন্য নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। আইএসএফ আমাকে সমর্থন করে। কিন্তু তৃণমূলের নীতি-আদর্শ ভাল। তাই তৃণমূলেই যোগ দিলাম।’’ সাদিকুলের দাবি, তাঁকে কেউ চাপ দেননি। ভয়ও দেখাননি। তিনি নিজের ইচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রবিবারও নওশাদকে তোপ দাগেন তিনি।
অন্য দিকে, সাদিকুলের এই যোগদানের কথা শুনে নওশাদ বলেন, ‘‘এতে আইএসএফের কোনও ক্ষতি হবে না। আসলে ভাঙড়ের মানুষ তো আইএসএফের সঙ্গে আছে।’’